সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। আমফানের দাপটে গাছ এবং দেওয়াল ভেঙে ও জলে ডুবে বাংলাদেশে মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সুন্দরবনের উপর প্রভাব না পড়লে বাংলাদেশে আরও বড়সড় ক্ষতি হতে পারে বলেই মনে করছেন আবহবিদরা।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে বাংলাদেশের ১৩টি জেলার মোট ৮৪টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙেছে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা জেলার। প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমফানে লক্ষাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত। হাজার হাজার গাছপালা ভেঙেচুরে একাকার। ভারী বর্ষণ ও তীব্র জোয়ারের জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পৌনে ২ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল। ভেসে গিয়েছে চিংড়ি-সহ অন্যান্য মাছের কমবেশি ৭০ হাজার ঘের। ঝড়ের সময় উপকূলীয় বিশাল এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে বিভিন্ন জায়গায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। সেখানকার চার উপজেলার কমপক্ষে ২৩ স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অনেক এলাকা জলের তলায় চলে যায়। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “আম, লিচু, কলা, সবজি, তিল এবং অল্প কিছু বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব করার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও আর্থিক সাহায্য করা হবে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পানচাষিদের মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণের আওতায় আনা হবে।”
তবে অনেকেই বলছেন, আমফানে বাংলাদেশের আরও ক্ষতি হওয়া অসম্ভব কিছুই ছিল না। যদিও আবহাওয়াবিদদের দাবি, আমফানের তাণ্ডব থেকে বাংলাদেশকে ঢাল হয়ে বাঁচিয়েছে সুন্দরী, গরান, গেঁওয়ার ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন। তাতে কিছুটা হলেও কমল ক্ষয়ক্ষতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.