সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে গোটা বাংলাদেশ (Bangladesh)। আর তারই মাঝে অঘটন। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল চারজনের। তাঁরা সকলে চুয়াডাঙা, পাবনা ও গাজীপুরের বাসিন্দা। শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মরশুমে এটাই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জনজীবন একরকম বিপর্যস্ত। দুই জেলায় চলছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ; সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় চুয়াডাঙাকে ছাপিয়ে গিয়েছে যশোর। সেখানে তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজধানী ঢকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমে ঢাকার অদূরে গাজীপুরে ১, চুয়াডাঙায় ২ ও পাবনায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। অতিরিক্ত তাপে গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচও।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সব স্কুল, কলেজ আপাতত সাতদিনের জন্য ছুটি (Holidays) ঘোষণা করেছে সরকার। ইদের ছুটি শেষে রবিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও এখন খুলবে না। আগামী ২৮ এপ্রিল স্কুল, কলেজ খোলার কথা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন কলেজগুলোর ক্লাসও।
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের আইনজীবীদের কালো গাউন পরার আবশ্যকতা শিথিল করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার কারণে জরুরি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রচণ্ড গরমে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। ঢাকার রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। শপিংমল, বাজার, ফুটপাতে বিক্রিবাটা প্রায় নেই। অনেক দোকানপাটও ছিল বন্ধ। যাদের ‘দিন আনি দিন খাই’ অবস্থা, তাদের ঘর থেকে না বেরিয়ে উপায় নেই। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষকে।
এপ্রিলের প্রথম দিকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ (Heat wave)শুরু হয়। ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কিছুটা কমে। এর পর ধীরে ধীরে আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। ১৫ এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে। গেল বছর পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। ১৯৯৫ ও ২০০২ সালেও সমান তাপমাত্রা উঠেছিল। ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশে আবহাওয়ার রেকর্ড রাখা শুরুর পর এটাই সর্বোচ্চ। ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহন কুমার বলেন, ”সারাদিন গরম লাগছে, ঘাম হচ্ছে না, শরীর জ্বলছে। এর কারণ হচ্ছে, দখিনা বাতাস নেই। সাগর থেকে উপকূল হয়ে যে বাতাস আমাদের ভূখণ্ডে প্রবেশের কথা, সেটা আসছে না। ফলে আর্দ্রতা নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.