ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুদেশের সম্পর্ক আগামিদিনে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী বাংলাদেশ ও আমেরিকা। এই মুহূর্তে ঢাকায় সফর করছে মার্কিন প্রতিনিধি দল। ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করে নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ। গত ৭ জানুয়ারির ধারণ নির্বাচন নিয়ে হাসিনা সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সেই সংঘাত এখন অনেকটাই কমেছে। বিএনপির অস্বস্তি বাড়িয়ে কয়েকদিন আগেই এক সঙ্গে কাজ করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
রবিবার, ঢাকা সফররত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এইলিন লুবাখারের নেতৃত্বে দেশটির একটি প্রতিনিধিদল বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সম্পর্ক উন্নয়নে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তাঁরা। মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে হাসান মাহমুদ বলেন, “আমরা অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমেরিকা আমাদের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী। গত ৫২ বছরের আমাদের পথচলায়, উন্নয়ন অভিযাত্রায় আমেরিকার বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের উন্নয়নের যাত্রায় তারা কীভাবে আরও বেশি সহযোগিতা করতে পারে, সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা হয়েছে আমাদের মধ্যে। রোহিঙ্গাদের কারণে যে নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়েছে সেনিয়ে কথা হয়েছে। তবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।” এছাড়া আমেরিকায় পালিয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাহিনীটির সাত আধিকারিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে আমেরিকা পাঁচটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
এদিকে, এই বৈঠক নিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুকে এক পোস্টে জানায়, ‘আমেরিকা একটি সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন করে। আমরা বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি, যে আমাদের দুই দেশ কীভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী, জলবায়ু, শ্রম এবং বাণিজ্য-সহ পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটনের ভিসা নীতিকেই আওয়ামি লিগ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল বিএনপি। গত ৭ অক্টোবর নির্বাচনের আগে থেকে একাধিকবার মার্কিন প্রশাসনের কাছে আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছে বিএনপি। অবশ্য সদ্যসমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঢাকার সঙ্গে আমেরিকার বছর জুড়েই সংঘাত জারি ছিল। এমনকি ভিসানীতি নিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। ভোটপ্রক্রিয়া অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে ক্রমাগত তোপ দেগে গিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আমেরিকার সমস্ত অভিযোগের পালটা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে। দিন দশেক আগেই বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাইডেনের চিঠি তুলে দেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেনের হাতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.