সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন হতে পারে বাংলাদেশে। এই ‘টাইমলাইন’ কোনওভাবেই পেরোতে চায় না নির্বাচন কমিশন। এমনটাই জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এই মুহূর্তে ভোট নিয়ে তোরজোড় শুরু করেছে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো একাধিক রাজনৈতিক দল। কিন্তু এখনও নির্বাচনের কোনও সঠিক দিনক্ষণ জানাতে পারেননি প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। গণতন্ত্র রক্ষায় ভোট নিয়ে তাঁর উপর বাড়াচ্ছে ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো দেশ।
গত বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হয় ওপার বাংলায়। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরেন শেখ হাসিনা। সরকার গড়ে আওয়ামি লিগ। কিন্তু ৭ মাসের মাথাতেই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চিত্র বদলে যায় বাংলাদেশের। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ‘গণ অভ্যুত্থানে’ পতন ঘটে আওয়ামি সরকারের। দেশছাড়া হন হাসিনা। ৮ আগস্ট ইউনুসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু তারপর দেশের পরিস্থিতি অরাজক হয়ে ওঠে। কিন্তু নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কারের উপরেই প্রথম থেকে জোর দিয়েছেন ইউনুস। কখনও তিনি বলছেন ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে আবার কখনও বলছেন আগামী বছরের মার্চে হবে।
কিন্তু আজ সোমবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, “ডিসেম্বরের কথা মাথায় রেখে আমরা এগোচ্ছি। আমাদের টাইমলাইন ডিসেম্বর। তখন ভোট হলে অক্টোবরে শিডিউল (তফসিল) ঘোষণা করতে হবে। টাইমলাইন যাতে মিস না করি সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা কিন্তু প্রধান উপদেষ্টাই দেবেন। তিনি ঘোষণা করলেই আমরা কাজ করা শুরু করব।” আসন্ন ভোট নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিইসি। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আমাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছি। আমরা তাদের কাছে প্রার্থীর এজেন্ট ও পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে সাহায্য চেয়েছি। তারাও আমাদের সহায়তা করতে চান। কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে তারা তা জানতে চেয়েছেন।”
বদলের বাংলাদেশে এখন চরম অরাজকতা। ভেঙে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা। দিকে দিকে খুন, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন লাগামচারা হারে বেড়ে গিয়েছে। বিপন্ন গণতন্ত্র। তাই অনেকেই বলছেন, এই পরিস্থিতি ঠিক করতে নির্বাচনই একমাত্র পথ। কয়েকদিন আগেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি ঠিক না হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার কাঁধে তুলে নেবে সেনাবাহিনী। এই সেনাশাসনের (মার্শাল ল) কথা শুনে ডিসেম্বরেই নির্বাচনের কথা জানান ইউনুস। কিন্তু তারপর ফের তাঁর গলাতেই শোনা যায় মার্চে ভোটের কথা। ফলে ডিসেম্বরে ভোট করাতে অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেদিকেই নজর সকলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.