সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাসের করাল কামড় থেকে বাঁচতে পুরো বিশ্ব এখন হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ভ্যাকসিন তৈরি করতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দুই বিজ্ঞানী ভাইরাসটির জীবন রহস্য উদঘাটন করেছেন। এর রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্বকে আরেকটি সাফল্যের খবর দিল বাংলাদেশ। সেটি হল, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক কাপড় তৈরি।
বিশ্বে প্রথম এই ধরনের কাপড় তৈরি করেছে দেশীয় নোমান গ্রুপের শাখা প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স (Zaber & Zubair Fabrics Ltd)। এই কাপড় ২ মিনিটের মধ্যে ৯৯.৯ শতাংশ ভাইরাসমুক্ত করা যাবে। আড়াই মাস ধরে জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স ও সুইজারল্যান্ডের বড় দুটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণার ফসল এটি। আন্তর্জাতিক ল্যাবে এর কার্যকারিতাও প্রমাণিত হয়েছে। আগামী মাসেই এই কাপড় দেশীয় বাজারে আসবে বলে মনে করছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
শুক্রবার ঢাকার গুলশানে নিজেদের অফিসে সংবাদিক বৈঠক করে এই কাপড় তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির চিফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মার্কেটিং অফিসার রাশিদ আশরফ খান বলেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরাই বিশ্বের প্রথম অ্যান্টি ভাইরাস ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া কাপড় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। যা দু মিনিটের মধ্যে যে কোনও ধরনের ভাইরাস ৯৯ শতাংশ নষ্ট করতে সক্ষম। মূলত এই কাপড় তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ। ফলে ওই কাপড়ে করোনা ভাইরাস-সহ অন্য কোনও ভাইরাস টিকতে পারবে না।’
সিনিয়র ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার অনল রায়হান বলেন, ‘সব ধরনের পোশাক তৈরিতে ভাইরাস প্রতিরোধী এই কাপড় ব্যবহার করা যাবে। তবে এই কাপড়ে তৈরি পোশাকের দাম তুলনামূলক বেশি হবে। এ কাপড়ের পোশাক ২০-৩০ বার পর্যন্ত ওয়াশ করা যাবে।’ জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে এই কাপড় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আইএসও (ISO) ১৮১৮৪-এর অধীনে এটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কাপড় তৈরির মূল উপাদানগুলি আমেরিকার বিষাক্ত পদার্থ নিয়ন্ত্রণ আইন ও পরিবেশগত সুরক্ষা সংস্থার ছাড়পত্রও জোগাড় করেছে। বিশেষত এই কাপড় মাস্ক, পিপিই, মেডিক্যাল গাউন এবং বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি জিন্স ও ওভেন কাপড়ে এমন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে প্যান্ট ও শার্ট তৈরি করে ব্যবহার করা যায়। এই কাপড় ওয়াশযোগ্য, মসৃণ, কোমল এবং সহজেই বাতাস ভেদযোগ্য। এটি ১০০ শতাংশ সুতির কাপড়, যাতে ত্বক নিরাপদ থাকবে। আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এই কাপড় নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করেছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে প্রাথমিকভাবে রপ্তানিও শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.