সুকুমার সরকার, ঢাকা: সুপার সাইক্লোন (Cyclone Sitrang) হয়নি, এই যা রক্ষে। নইলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বেশ ভালরকম ক্ষয়ক্ষতি করেছে বাংলাদেশের (Bangladesh)। মঙ্গলবার দুর্যোগ কাটতেই সেসবের খতিয়ান দেখে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রশাসনিক কর্তারা। সরকারি হিসেব অনুযায়ী সিত্রাং বিপর্যয়ের মাঝে ৯ জনের প্রাণহানি হলেও বিভিন্ন স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ১০ লক্ষ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। হাজার হাজার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুর্যোগ কেটে রোদ উঠতেই সরকারি আধিকারিক, মন্ত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েছেন। উপকূলের জেলাগুলি – ভোলা, নোয়াখালি, কুমিল্লা, বরগুনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি (Damage) হয়েছে। প্রাণহানির খবর বেশি এসেছে ভোলা, কুমিল্লা থেকে। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে গাছে চাপা পড়ে। দেশের প্রায় ৭ হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ (Electricity connection) সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ট্রান্সমিশনে আঘাত না হলেও অনেক পোল ভেঙে গেছে। প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎহীন। এমনই হিসেব দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ। বুধবারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা মিলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজারের (Cox’s Bazar) টেকনাফে উপকূলীয় অঞ্চলে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উঁচু ঢেউয়ের ধাক্কায় মেরিন ড্রাইভের বেশ কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত মেরামতির চেষ্টা করছে বলে আশ্বাস। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম, বরিশাল, কক্সবাজার বিমানবন্দরে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে বিমান চলাচল। রবিবার সন্ধের দিকে ঝড়ঝঞ্ঝা শুরু হলে বরিশাল বিমানবন্দরে ৮ টি বিমানকে জরুরি অবতরণ করানো হয়েছিল।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মহম্মদ এনামুর রহমান বলেন, ”ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পটুয়াখালি, ভোলা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে সিত্রাং। আমরা ৬ হাজার ৯২৫ আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ লক্ষ মানুষকে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম। মধ্যরাত থেকেই তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করে। ভোরের মধ্যে এগুলি সব খালি হয়।” তবে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়কে নিয়ে যতটা আশঙ্কা ছিল, ততটা বিপর্যয় হয়নি বলেই জানান মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”সিত্রাং নিয়ে পূর্বাভাস ছিল, অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু এটি ঘূর্ণিঝড়ই ছিল, প্রবল বা সুপার সাইক্লোন হয়নি।” ইতিমধ্যে শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ, আর্থিক সাহায্য দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.