সুকুমার সরকার, ঢাকা: ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। রক্তাক্ত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। ঝরেছে শতাধিক প্রাণ। বিক্ষোভ-প্রতিবাদে গোটা দেশে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিস্তর। এই আন্দোলনকে হিংসাত্মক করে তোলা ও শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি-জামাতের মতো সমমনস্ক দলগুলোর বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামাত-ছাত্রদলকে জঙ্গি বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ করে জামাত শিবিরের ক্যাডাররা। দিন দুয়েক আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিসতিয়াগা ওচহোয়া ডি চিনচিক্রুর সঙ্গে সাক্ষাতে এমনটাই জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সূত্রের খবর, আগামিকাল বুধবার জামাতকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করা হতে পারে। জোটের বৈঠকে এমনই কথা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,”বিএনপি-জামাত-ছাত্রদল-শিবির জঙ্গি। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে ধ্বংস করতে আমাদের উপর থাবা দিয়েছে। দেশে যে কাণ্ডগুলো ঘটছে, তা আসলে রাজনৈতিক কিছু নয়। এসব সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদী কাজ। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে ধ্বংস করা।”
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আরও বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামাত। বিশ্ববাসী এখন বাংলাদেশের নাম শুনলে সমীহ করে। সম্মানের চোখে দেখে। আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা তুলে আনতে সক্ষম হয়েছি। দিনরাত পরিশ্রম করে বাংলাদেশ যে সম্মান অর্জন করেছে, তা জঙ্গিরা ধূলিসাৎ করেছে।” বৈঠকের পর সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলীয় জোটের নেতারা মনে করেন, বিএনপি-জামাত, ছাত্রদল, শিবির ও তাদের দোসর উগ্রবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র করছে।
বলে রাখা ভালো, উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে জামাতে ইসলামির নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দলটির ছাত্রসংগঠনের নাম ইসলামি ছাত্রশিবির। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামাতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের কথায়, গত এক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জামাত শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডারদের ঢাকায় জড়ো করা হয়। তারাই দেশকে অশান্ত করেছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার বিশ্লেষণ দরকার। জামাতকে নিষিদ্ধের বিষয়টি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময়ই এসেছিল। তখন করা হয়নি। এখন বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু সরাসরি জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেন বৈঠকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.