সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা টিকা নিয়ে চিনের সঙ্গে টানাপোড়েন বাংলাদেশের (Bangladesh)। একইসঙ্গে QUAD গোষ্ঠী নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এহেন পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করল হাসিনা সরকার।
মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, “দেশে করোনা সংক্রমণ রুখতে চিন থেকে টিকা কিনতে চেয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে চিনের রাষ্ট্রদূত যে মন্তব্য করেছেন সেটি দু:খজনক।” তিনি বলেন, “জনগণের স্বার্থ দেখেই সঠিক সময়ে চিনের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে টিকার ব্যাপারে চিনা রাষ্ট্রদূত যে মন্তব্য করেছেন সেটি দু:খজনক।” বলে রাখা ভাল, বুধবার অর্থাৎ আজ সিনোফার্মের তৈরি পাঁচ লক্ষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। এই বিষয়টি সোমবার জানান চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। সেসময় তিনি বলেছিলেন, “অনেক দেশেই চিনের টিকার চাহিদা রয়েছে। তবে, বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশ যা পেতে চায়, সেই টিকা পেতে বাংলাদেশের সময় লাগবে। তাছাড়া বাংলাদেশ এক সপ্তাহ আগে শুধু সিনোফার্মের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তাই টিকা পাঠাতে দেরি হচ্ছে।”
এদিকে, টিকার বিষয়টি ছাড়াও আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কৌশলগত জোট ‘কোয়াড’ নিয়ে চিনা রাষ্ট্রদূতের অবাঞ্ছিত মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা একটা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমাদের বিদেশনীতি আমরা নির্ধারণ করি। যে কোনও দেশ তার বক্তব্য তুলে ধরতে পারে। দেশের মঙ্গলের জন্য আমরা কী কাজ করব না করব, আমাদের মৌলিক অবস্থানের ভিত্তিতে আমরাই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।” চিনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুল মোমেন বলেন, “চিনের রাষ্ট্রদূত তার দেশের অবস্থানের কথা বলেছেন। যে প্রতিষ্ঠানের কথা উনি বলছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের (কোয়াড) কেউই এখনও আমাদের কোনও প্রস্তাব দেয়নি। বিষয়টা নিয়ে অযথা বিতর্ক হয়েছে। চিনের এ রকম আগ্রাসী কথাবার্তা কখনও কাউকে বলতে শুনিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা কী করব, না করব সেটা আরেকজন বড় করে বলছেন। দেশের মঙ্গলের জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটাই আমরা করব।”
উল্লেখ্য, আমেরিকার উদ্যোগে ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া কোয়াড সম্প্রতি অন্তর্জাতক সমীকরণে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। এই ইস্যুতে সোমবার বাংলাদেশে চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছিলেন যে, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন এ জোটকে চিনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেজিং। তাই চিন মনে করে, এতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেজিং সম্পর্কে ‘যথেষ্ট খারাপ প্রভাব ফেলবে’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.