সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশ নতুন করে আর কোনও রোহিঙ্গা (Rohingya) নাগরিককে প্রবেশ করতে দেবে না। বৃহস্পতিবার ঢাকায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের জন্যই বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসা দু’টি নৌকা ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন করে কোনও রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড এবং স্থল সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পর বাংলাদেশ বড় সংকটে আছে। কক্সবাজারের স্থানীয় এলাকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশগত বিপর্যয়েরও আশঙ্কা বেড়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের পক্ষে আর একজনও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। এই কারণেই রোহিঙ্গাবাহী দু’টি নৌকা ফেরত পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেক দেশের যথেষ্ট সামর্থ্য আছে। বিশেষ করে যারা রোহিঙ্গাদের নানা অধিকারের জন্য উচ্চকণ্ঠে কথা বলে। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিন, যাঁরা বাংলাদেশে আছে তাঁদেরও নিয়ে যান।’ সম্প্রতি বাংলাদেশে ঢুকতে না দেওয়া রোহিঙ্গাবাহী ওই দু’টি নৌকা এর আগে মালয়েশিয়ার সীমান্তে নোঙর করতে চাইলে সেখানকার নৌ বাহিনী তাদের বাধা দিয়ে ফের সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়। এরপর প্রায় ৫০০ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌকা দু’টি বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে।
২০১৭ সালে রাখাইনে মায়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান ও গণহত্যা শুরু হওয়ার পর প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মানবিক কারণে তখন বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয় সরকার। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রাখাইন থেকে এসে আরও প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। নতুন করে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ যুক্ত হওয়ায় ২০১৭ সালের শেষে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১১ লক্ষ। এরপর থেকে নানা ধরনের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চললেও নানা অপকৌশলে মায়ানমার রোহিঙ্গাদের এখন পর্যন্ত ফেরত নেয়নি। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনও দেশ নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে আশ্রয়ও দেয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.