ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরাতে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। এই বিষয়ে সাহায্য চাইতে কম্বোডিয়া সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি প্রতিনিধি দল। সাংসদ ফারুক খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাপর্ণে কম্বোডিয়ার সহযোগিতা চায়।
সেখানকার একটি সংবাদমাধ্যম সাক্ষাৎকারে ফারুক খান বলেন, ‘গতমাসে আসিয়ান (Asean)-এর পক্ষ থেকে মায়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা গিয়েছিল। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করে তারা। মায়ানমারের বিদেশ মন্ত্রকের আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অর্থনীতিক বিভাগের পরিচালক চ্যান অ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ওই দলে মোট ৯ জন সদস্য ছিল। সেখানে গিয়ে তাঁরা রোহিঙ্গাদের রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে উৎসাহ দেন। মায়ানমারের প্রতিনিধিরা ছাড়াও সাত সদস্যের একটি দল ছিল ওই সফরে। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাপর্ণের বিষয়ে আলোচনা হল। একই রকম আলোচনা ২০১৮ সালের অক্টোবরে এবং ২০১৯ সালের জুলাইয়ে কোনও রকম ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছিল। এবারও মায়ানমারের প্রতিনিধি দল আশ্বস্ত করার পরেও রোহিঙ্গারা তাঁদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। মায়ানমারের প্রতিনিধি দল অন্য বৈঠকগুলি মতো এবারও রোহিঙ্গাদের মূল আশঙ্কার বিষয়টি নিয়ে অনমনীয় ছিল। তাই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।’
মায়ানমার এবং কম্বোডিয়া উভয়ই আসিয়ানের সদস্য। সেকথা মনে করিয়ে ফারুক সাহেব আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সব আসিয়ানভুক্ত দেশে থেকে এই সমস্যা সমাধানে সমর্থন আশা করে। এটি এমন একটি সংকট যদি দীর্ঘদিন ধরে সমাধান না হয়ে তাহলে আঞ্চলিক শান্তি , উন্নতি এবং উন্নয়ন স্তব্ধ হবে। প্রত্যেকটি প্রত্যাপর্ণই প্রকৃতিগতভাবে আলাদা এবং রোহিঙ্গা সংকটটিও তেমন। রোহিঙ্গারা মায়ানমারের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, যারা দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা দূর করতে পারাই এই সংকট সমাধানে একমাত্র স্থায়ী সমাধান হতে পারে। আমরা স্বাগত জানাব যদি কম্বোডিয়া রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভূমিতে স্থায়ী প্রত্যাপর্ণের জন্য মায়ানমারকে সাহায্য করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে প্রচুর রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়ে একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি আমদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। তবে এর জন্য আমরা ৬ হাজার ৮০০ একর জমি নষ্ট করেছি এবং এতে আমাদের জীববৈচিত্র্য এবং বন্যজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন এমন পরিস্থিতিতে নেই যে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন করবে। রোহিঙ্গা সংকট তৈরি হয়েছে মায়ানমারে। তাই সমাধান তাদেরই করতে হবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.