ছবি: পিটিআই।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: লাগাতার আন্দোলনের জেরে কিছুটা পিছু হঠেছে সরকার। বাংলাদেশের সংরক্ষণ বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিকতম রায় অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য সংরক্ষণ ৩০ শতাংশ থেকে কমানো হয়েছে ৫ শতাংশে। কিন্তু তাতেও আন্দোলনে জল ঢালা যায়নি। বিক্ষোভ কমেনি। বরং বাকি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের (Bangladesh) ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এমনই জানা যাচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। এই আন্দোলন দমনে যাঁদের গ্রেপ্তার করে জেলে ঢোকানো হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি চাই বলে দাবি ছাত্রদের।
২০১৮ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য সংরক্ষণ (Quota) বাতিল নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলেছিল হাই কোর্ট। সেই রায়কে আংশিকভাবে খারিজ করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। রবিবারের রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষণকে একেবারে তুলে দেওয়া হয়নি। তবে তার হার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানসন্ততিদের জন্য। বাকি শ্রেণির জন্য তা ২ শতাংশ। অবশিষ্ট ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে পুরোপুরি মেধার (Merit) ভিত্তিতে। এই রায়ে আন্দোলনকারীরা সন্তুষ্ট, এমনটাই ভেবে নেওয়া হয়েছিল। রায়ঘোষণার পর সরকারের তরফে আবেদনও জানানো হয়, পড়ুয়ারা প্রতিবাদে ইতি টেনে ক্লাসে এসে পড়াশোনায় মন দিক।
কিন্তু পরিস্থিতি এতটা সহজ হল না। একাধিক সংবাদমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, এই রায়ে মোটেই খুশি নন আন্দোলনকারীরা। ৫ শতাংশ সংরক্ষণেও তাঁদের আপত্তি। তাঁরা চাইছেন, পুরোপুরি কোটা তুলে দেওয়া হোক। সেইসঙ্গে এই আন্দোলনে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক নিঃশর্তে। আর দমনপীড়নে যেসব পুলিশ আধিকারিকরা জড়িত, তাঁরা পদত্যাগ করুক। কেউ কেউ আরও একটু এগিয়ে দাবি তুলছেন, শুধু ছাত্র স্বার্থরক্ষাকারী রায় দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না, এই সরকারের ইস্তফা চাই। অন্যথায় প্রতিবাদ (Protest) চালিয়ে যাবে তারা।
তবে এই আন্দোলনের জেরে দেশজুড়ে তৈরি হওয়া অস্থিরতা নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত পুলিশ প্রশাসন। তাদের তরফে জানানো হচ্ছে, অনেক পড়ুয়া নিখোঁজ। বিরোধী বিএনপি (BNP) ষড়যন্ত্র করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে দাবি। উলটোদিকে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ আইন না মেনে ধরপাকড় করেছে। তাই সকলকে ছেড়ে দিতে হবে। সবমিলিয়ে, সুপ্রিম কোর্ট সংরক্ষণের সুবিধা অনেকাংশে খর্ব করলেও অশান্তি কমছে না। কবে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি? উত্তরের অপেক্ষায় সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.