সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর প্রভাবে প্রবল জোয়ারে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় গোটা সুন্দরবন। আমফানের তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। পরিস্থিতি সামাল দিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চলছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার আছড়ে পড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আসা জোয়ারের জলে তলিয়ে গিয়েছে সব মিষ্টিজলের পুকুর। সুন্দরবনে কর্তব্যরত বনকর্মী, জেলে ছাড়াও এসব পুকুরের জল পান করে বাঘ, হরিণ-সহ অন্য বন্যপ্রাণীরা। গত বছর এমন সময়ে উপকূলে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান। তবে সেই তুলনায় যশের প্রভাবে সুন্দরবনে এক থেকে দেড় ফুট জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যশ ও পূর্ণিমার প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে বিপদে পড়া পাথর বোঝাই জাহাজের ১২ নাবিককে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দু’টি ‘এডব্লিউ-১৩৯’ হেলিকপ্টার। বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ভাসানচর এলাকার এমভি সানভ্যালি নামের জাহাজ থেকে তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হকে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মহম্মদ এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় ৯ জেলার ২৭ উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকায় সচিবালয়ে সার্বিক ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ২৭টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে যশের আঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিনের একমাত্র পর্যটক জেটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। উত্তাল সাগরের ঢেউ আঘাত হানলে জেটির অধিকাংশ পন্টুন, রেলিং ও সিঁড়ি নষ্ট হয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকেই ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ারের জল জেটিতে আঘাত করতে থাকে। এতে জেটির পন্টুনে ফাটল দেখা যায়। দ্বীপের চারদিকে লোনাজল প্রবেশ করায় মিষ্টি জলের সংকট দেখা দিয়েছে। জোয়ারের জলের কারণে বনের মধ্যে তুলনামূলক উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা গিয়েছে বন্য প্রাণীদের। আশপাশের জঙ্গল তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে বেড়ে গিয়েছে বিভিন্ন সাপের আনাগোনা। এছাড়া অসহায় অবস্থায় পড়েছে বন্যপ্রাণীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.