সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছে করোনা ভাইরাস। মারণ রোগটির কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। পরিস্থিতি আরও জটিল করে স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর বিপুল চাপ তৈরি করছে সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ। চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রীতিমতো উদ্বেগজনক। এহেন সময়ে অনেক কম খরচে ভেন্টিলেটর তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া।
করোনা মোকাবিলায় অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে ভেন্টিলেটর। তবে অত্যন্ত জরুরি এই যন্ত্রটির চাহিদা তুঙ্গে থাকলে জোগান সেই অর্থে নেই। বিদেশ থেকে আমদানি করতে খরচ পড়ছে অনেকটাই, যা বাংলাদেশের পক্ষে বহন করা কষ্টসাধ্য। তবে এই সমস্যার একটি সমাধান খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ঢাকা কলেজ বিজ্ঞান ক্লাবের সদস্য সানি জুবায়ের। অনেক কম খরচে ভেন্টিলেটর তৈরি করেছেন তিনি। তাঁরই নেতৃত্বে গত বছর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড রোবটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১৩তন স্থান দখল করে বাংলাদেশ৷ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চিকিৎসায় ব্যবহৃত ভেন্টিলেটর যন্ত্রের চাহিদা বেড়েছে৷ করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ভেন্টিলেটর প্রয়োজন৷ রোগীর ফুসফুস যদি কাজ না করে তাহলে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ ভেন্টিলেটর করে৷
নিজের তৈরি ভেন্টিলেটর সম্পর্কে শিক্ষার্থী সানি জুবায়ের বলেন, “বাইরের দেশ থেকে যে ভেন্টিলেটর আনা হয় সেগুলির দাম অনেক বেশি৷ ওই ভেন্টিলেটরগুলি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়৷ বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য যেটা প্রয়োজন- তা হল ভেন্টিলেটরের সাহায্যে ফুসফুসে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়া এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বের করা৷ আর এই কাজটা করা হয় মেকানিক্যালভাবে৷ আমার তৈরি ভেন্টিলেটর এই কাজটা পুরোপুরি করতে সক্ষম৷” এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১ হাজার ২৫০টি (সরকারি হাসপাতালে ৫০০টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৭৫০টি) ভেন্টিলেটর রয়েছে৷ আর এসব ভেন্টিলেটরের বাজার মূল্যও বেশি৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে অন্তত পঁচিশ হাজার ভেন্টিলেটর থাকা দরকার। করোনা মহামারী বিশ্বজুড়ে চলতে থাকায় ভেন্টিলেটরের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি এত বিপুল পরিমাণে ভেন্টিলেটর উৎপাদন, বিপণন সম্ভব হয়ে উঠছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.