সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভিসা নিয়ে পাকিস্তান সরকার জলঘোলা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাকিস্তান সরকারের জন্যই সেদেশের মানুষরা ইসলামাবাদ থেকে বাংলাদেশের ভিসা পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ যে পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেনি, তাও বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। এই অভিযোগই করা হয়েছে বাংলাদেশের তরফে।
গত ১৩ মে থেকে ইসলামাবাদে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন কোনও ভিসা ইস্যু করছে না। গত বৃহস্পতিবার হাইকমিশনের ভিসা কাউন্টার খোলা হলেও শুধু আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সেই আবেদনের ভিত্তিতে কোনও কাজ করা হচ্ছে না। ইসলামাবাদে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তার জন্য পাকিস্তানই দায়ী। কারণ, হাইকমিশনে ভিসা দেওয়ার জন্য যে আধিকারিককে বাংলাদেশ সরকার নিয়োগ করেছে পাকিস্তান তাঁকে ভিসা দিচ্ছে না। আর এর ফলে তিনি পাকিস্তানে যেতে পারছেন না।
অন্যদিকে তাঁর অবর্তমানে বাংলাদেশের যে ব্যক্তি দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁর ভিসারও মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে তিনি ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, পাকিস্তান সরকার এখনও তাঁকে ভিসা দেয়নি। এমনকী বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসকারী ওই আধিকারিকের পরিবারের সদস্যদেরও ভিসা দিচ্ছে না তারা। বাংলাদেশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পাকিস্তান গায়ে পড়ে সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ইসলামাবাদে অবস্থানরত বাংলাদেশি আধিকারিকদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা হয়ে গিয়েছে বলে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে একাধিকবার ডাকা হয়েছে। কিন্তু, সেখানে তাঁদের দীর্ঘ সময় বসিয়ে রেখে কোনও কারণ না দেখিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ইসলামাবাদে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ভিসা ইস্যুতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ডঃ এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্যই তুলে ধরেন। গত ২১ মে মোমেন বলেছিলেন, বাংলাদেশ কাউকে ভিসা দেওয়া বন্ধ করেনি। তবে পাকিস্তানই বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ভিসা দিচ্ছে না বলে বিদেশমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন সে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন পাকিস্তানি মুখপাত্র।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পাকিস্তান মনোনীত হাইকমিশনার সাকলিন সায়েদার ‘অ্যাগ্রিমো'(হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ বিষয়ে স্বাগতিক দেশের সঙ্গে চুক্তি) গ্রহণ না করার বিষয়টি ওই দেশের আঁতে ঘা লেগেছে। রীতি অনুযায়ী, ‘অ্যাগ্রিমো’ গ্রহণ না করলে ওই দেশকে হাইকমিশনার হিসেবে নতুন প্রস্তাব করতে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়। বাংলাদেশ তা করেছেও। কিন্তু পাকিস্তান এখন সায়েদার ‘অ্যাগ্রিমো’ বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে
অপেক্ষায় আছে। বিদেশমন্ত্রী মোমেন গত সপ্তাহে বলেন, পাকিস্তান এ দেশে তার হাইকমিশনার হিসেবে নতুন কারও নাম প্রস্তাব করলে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ তা বিবেচনা করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.