সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার নৃশংসতা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে যেকোনও মুহূর্ত পাকিস্তানের উপর আঘাত হানতে পারে ভারত! যদি সময় যাচ্ছে জোরাল হচ্ছে সেই সম্ভাবনা। সব মিলিয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। আর এই সুযোগেই আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে যুদ্ধ লাগলে নাকি ঢাকার উচিত ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো দখল করে নেওয়া। আর এর জন্য তারা হাত মেলাবে চিনের সঙ্গে। ওপার বাংলার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানের এহেন মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের পূর্ব প্রান্তের সাতটি রাজ্য, যাদের সেভেন সিস্টার্স বলা হয়, ওই বিরাট অঞ্চল কিন্তু পাহাড় আর স্থলভাগে ঘেরা। সমুদ্রপথে যোগাযোগ করার উপায়ই নেই তাদের। বাংলাদেশই হল সমুদ্রপথের রাজা। তাই ওই এলাকায় চিনা অর্থনীতির বিস্তার ঘটতেই পারে।” এই মন্তব্যের ইঙ্গিত অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ভারতের ৭ রাজ্য (সেভেন সিস্টার)কে ভেঙে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই একই ইচ্ছা চিনের। যদিও সেই চৈনিক চাল বারবার ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মুখে এমন মন্তব্যে দুয়ে দুয়ে চার করতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি দিল্লির। কড়া জবাব হিসাবে ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ব্যবসার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এবার বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান ফেসবুকে লেখেন, “যদি পাকিস্তানের উপর ভারত হামলা চায় তাহলে বাংলাদেশের উচিত ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো দখল করে নেওয়া। আমার মনে এই সময় যৌথ সামরিক অভিযানের জন্য চিনের সঙ্গে আলোচনায় বসা।” মজলুর রহমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রধান ছিলেন। বর্তমানে ইউনুসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো। ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তিনি ইউনুসকে বলেছিলেন, চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে।
শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে রাজনৈতিক চিত্র। পালটে গিয়েছে কূটনৈতিক নীতিও। পদ্মাপাড়ে এখন ভারত বিরোধী হাওয়া। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই আসরে নেমেছে চিন, পাকিস্তান। দুই দেশই ঢাকার উপর প্রভাব বিস্তার করছে। আনাগোনা বেড়েছে তাদের আধিকারিকদেরও। তবে এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজর ভারত-পাকিস্তানের উপর। পহেলগাঁওয়ের হামলার প্রাথমিক তদন্তে লস্কর, পাক সেনা এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের দাবি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ফলে যুদ্ধ যে আসন্ন সেই জল্পনা ক্রমশই বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক কেমন তা বিলক্ষণ জানে ঢাকা। আর ‘নতুন’ বাংলাদেশও এখন পাকিস্তানের প্রেমে মজে। ফলে যুদ্ধ লাগলে ইউনুস কার পক্ষ নেবেন তা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.