সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রয়াত বাংলাদেশের বিখ্যাত বইপ্রেমী পলান সরকার। বার্ধক্যজনিত রোগে শুক্রবার ১২টা নাগাদ রাজশাহীর বাঘা উপজেলা বাউশার নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৯৮ বছর।তাঁর প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
[ঢাকায় বিমান ছিনতাই ‘নাটক’-এর তদন্ত শুরু, নায়িকা শিমলাকে ডেকে জেরার প্রস্তুতি]
পলান সরকারের আসল নাম হারেজউদ্দিন। ১৯২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্মের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তাঁর বাবা মারা যান। আর্থিক টানাপোড়েনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই লেখাপড়ায় ইতি টানতে বাধ্য হন পলান। তবে তথাকথিত ডিগ্রিধারী স্বাক্ষর না হলেও শিক্ষিত ছিলেন তিনি। নিজের অনটনের কথা মাথায় রেখেই এক মহান উদ্দেশ্যে নিজেকে সমর্পিত করেন ওই বইপ্রেমী। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সমাজের অন্ধকার দিক আলোকিত করতে হলে প্রয়োজন শিক্ষার প্রদীপের। তা সে যতোই ক্ষুদ্র হোক না কেন। তাই একাই এক মহান ব্রতে নিজেক নিবেদিত করেন তিনি। পায়ে হেঁটে প্রায় ৩০ বছর ধরে নিজের টাকায় বই কিনে পাঠকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতেন পলান সরকার। তাঁর এই অবদানের জন্য ২০১১ সালে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। প্রথমদিকে একাই লড়াই করলেও শেষমেশ স্বীকৃতি পান তিনি।বহুবার দেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম দখল করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ‘সায়াহ্নে সূর্যোদয়’ নামে একটি নাটকও তৈরি হয়েছে তাঁকে নিয়ে।
হারেজ উদ্দিন নাম হলেও দেশজুড়ে পলান নামেই পরিচিতি পেয়েছেন এই বইপ্রেমী। মৃত্যুকালে ছয় ছেলে ও তিন মেয়ে-সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন তিনি। একক প্রচেষ্টায় যে কতটা পরিবর্তন আনা সম্ভব তা প্রমাণ করেছেন পলান। নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিতান্তই গৌণ ছিল তাঁর কাছে। তবে দেহ নষ্ট হলেও থাকবে পলানের আদর্শ।
[বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আরও আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রসংঘের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.