সুকুমার সরকার, ঢাকা: সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে ব্রিটেনের সম্পদ হতে চান বাংলাদেশের (Bangladesh) আইএস বধূ শামিমা বেগম। তিনি মনে করছেন, ইসলামিক স্টেটে (IS) যোগ দেওয়ার তাঁর কাছে মৃত্যুও শ্রেয় ছিল। এক টেলিভিশনে চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন। ওই সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশে শামিমার বার্তা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের লড়াইয়ে ‘সম্পদ’ হতে পারেন তিনি। আইএস যোগ প্রমাণিত হওয়ার পর থেকে শামিমার নাগরিকত্ব খারিজ করেছে ইংল্যান্ড (UK) । বাংলাদেশও তাঁকে গ্রহণ করেনি। এই মুহূর্তে সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন শামিমা। কিন্তু আক্ষেপ, এভাবে থেকে তাঁর জীবন নষ্ট হচ্ছে। বরং ব্রিটেন তাঁকে সন্ত্রাসবাদ দমনে কাজ করার সুযোগ দিক।
শামিমা বেগমের বয়স এখন ২২ বছর। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই বান্ধবী-সহ ব্রিটেন থেকে সিরিয়ায় (Syria) পাড়ি জমান বাংলাদেশের ওই কিশোরী। তাঁরা তিনজনই বাংলাদেশি–অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী। সিরিয়ায় পাড়ি দিয়ে শামিমা বেগম ডাচ্ (Dutch) বংশোদ্ভূত আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে শামিমার সাক্ষাৎকার নেন। তখনই শামিমা ব্রিটেনে ফেরার আকুতি জানান। কিন্তু দেশের জাতীয় সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আইএসের সঙ্গে যুক্ত থাকা কাউকে নাগরিক হিসেবে রাখতে রাজি নয় ব্রিটেন। তাই তাঁর আরজি খারিজ হয়েছে।
সম্প্রতি তিনি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হামলা চালায়, মানুষ হত্যা করে – এমন একটি গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় তাঁর কেমন লাগত। এই প্রশ্নের জবাবে শামিমা বলেন, ‘‘এই কারণে আমি নিজেকে ঘৃণা করি।’’ তিনি এও বলেন, আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে মানুষকে কীভাবে প্রলুব্ধ করে, সেই কৌশল সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারকে ধারণা দিতে পারবেন তিনি। ব্রিটেনে ফিরতে পারলে তিনি এই কাজ করতে পারবেন। এনিয়ে তিনি বরিস জনসনকেও বার্তা পাঠিয়েছেন।
দিন কয়েক আগে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় শামিমা বেগমের রূপই ছিল অন্য। মাথায় ছিল একটি নাইকি (Nike) ব্র্যান্ডের বেসবল ক্যাপ। শরীরে নিকাবের পরিবর্তে অনেকটা লো-কাট টপ। তবে মুখে তেমন গ্ল্যামার ছিল না। কারণ, শরণার্থী ক্যাম্প সুখের জায়গা নয়। সেখানে থাকতে থাকতে তার চেহারার লাবণ্য কমে গেছে। শামিমা বলেন, ”এই মুহূর্তে আমার উপলব্ধি, আইসিসে যোগ দেওয়ার চেয়ে মৃত্যু হওয়ায় ভাল ছিল। কৃতকর্মের কারণে আমার চেয়ে অন্য কেউ আমাকে বেশি ঘৃণা করতে পারবে না। আমি যা বলতে পারি তা হল, আমি দুঃখিত। আমাকে শুধু দ্বিতীয় সুযোগ দিন।” নিজেকে ‘ক্রিমিনাল’ বলে স্বীকার করেন না শামিমা। বলেন, ”আমার একমাত্র অপরাধ, আমি আইসিসে যোগ দিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.