সুকুমার সরকার, ঢাকা: থামছে না কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে রোহিঙ্গাদের পালানো। শনিবার অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সেন্ট মার্টিন থেকে পাঁচ পাচারকারী-সহ ১৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে রোহিঙ্গা-সহ যুবক-যুবতীদের পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকায় গ্রেপ্তার ২০ জন।
কয়েকদিন আগে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে মারা যান ফেঞ্চুগঞ্জের মুহিদপুর গ্রামের আবদুল আজিজ। বৃহস্পতিবার রাতে তার দাদা মফিজউদ্দিন এ বিষয়ে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। তাঁর অভিযোগ, তার ছোট ভাই আব্দুল আজিজকে ইতালি পৌঁছে দেওয়ার জন্য আট লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবছরই বর্ষার আগে রোহিঙ্গাদের অনেকেই বিদেশে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কারণ, বর্ষায় সাগর উত্তাল থাকে। তাই গরমের সময় দালালদের সাহায্যে সাগর পেরিয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া-সহ আশপাশের দেশগুলোতে আশ্রয় খোঁজে তারা। তবে এবার অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের ক্যাম্প ছাড়ছে বলে খবর। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকেই এইচআইভি-তে আক্রান্ত। তারা ক্যাম্প থেকে বাইরে এসে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করায় ভয়ানক বিপদের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। কক্সবাজার-সহ সারাদেশে এইচআইভি সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়ছে। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে ৬০০ জনকে এইডস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্প থেকে পালানো ঠেকাতে ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এপ্রসঙ্গে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ এম এ মতিন বলেন, “ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা অন্যত্র ছড়িয়ে পড়লে অবশ্যই এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। কক্সবাজার ছাড়া অন্য জেলাও এই ঝুঁকির বাইরে নয়। এটা এড়াতে হলে ক্যাম্পের বাইরে কোনওভাবেই রোহিঙ্গাদের বেরোতে দেওয়া যাবে না।” কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, “২০১৭ সালের পর থেকে ক্যাম্পের বাইরে চলে গেছে এমন ৬৭ হাজার রোহিঙ্গাকে ফের ক্যাম্পে ফেরত আনা হয়েছে। বর্ষার আগে তাদের মধ্যে ক্যাম্প ছাড়ার প্রবণতা থাকে। তাই ক্যাম্পের মধ্যে তাদের রাখতে হলে বেশকিছু ব্যাপারে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। পুলিশের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পের নির্দিষ্ট এলাকায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, পর্যাপ্ত আলো, রোহিঙ্গাদের যাতায়াতের রাস্তা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া-সহ একাধিক বিষয় তাতে রয়েছে। যেসব রোহিঙ্গা অপরাধ করে পালিয়েছে তাদের রেশন বন্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, “সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। হঠাৎ করে রোহিঙ্গা পাচার বেড়ে যাওয়ায় আমরাও চিন্তিত।
অন্যদিকে শুক্রবার কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে খতম হয় মহম্মদ ইব্রাহিম (৩২) নামে এক কুখ্যাত ইয়াবা কারবারী। সাবরাং ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া ঝাউবন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার মাদানী মসজিদে আত্মসমপর্ণ করে সাতজন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মহম্মদ নেজামউদ্দিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.