সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবৈধভাবে জলপথ পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হল অন্তত ১৫ জনের। মৃতরা সকলেই রোহিঙ্গা, তাঁদের মধ্যে ২ জন শিশু বলে জানা গিয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে। আরও মৃতদেহ উদ্ধারের আশঙ্কা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে ৬৭ জনকে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ সকালে, কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের কাছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হতাহতদের সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক। নৌকায় সাগরপাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টায় ছিলেন তাঁরা। উপকূলরক্ষী বাহিনীর সেন্ট মার্টিন স্টেশনের কমান্ডার নাইমুল হক বলেন, “টেকনাফ দিয়ে দুটি ট্রলারে করে রোহিঙ্গারা পাড়ি দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাটি ডুবে গিয়েছে। নৌকায় ১২০ জন যাত্রীর মধ্যে ১৫ জনের মরদেহ ও ৬৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় বা বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি আমরা।” কাজে নেমেছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর তিনটি দল, সেন্ট মার্টিন বোট মালিক সমিতি, BGB-সহ একাধিক সংগঠন।
সোমবার রাতে টেকনাফ উপকূল বরাবর দুটি ট্রলার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ সাগরের মধ্যে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি ট্রলার ডুবে যায়। উদ্ধার হওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, দালালদের মাধ্যমে তাঁরা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে বের হয়ে মালয়েশিয়ার আশ্রয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝপথে এমন দুর্ঘটনায় আতঙ্কিত তাঁরা।
সেন্ট মার্টিনের কাছে নৌকাডুবির ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে সাম্প্রতিককালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এভাবেই ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে বহু শরণার্থীর ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকে। ওই সময়ও তুরস্ক, লিবিয়া, সিরিয়া থেকে শরণার্থীরা অবৈধভাবে নৌকায় চড়ে পশ্চিমের দেশগুলিতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করতেন। দুর্ঘটনাও ঘটত। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে অনেক সময়েও ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি হয়ে মৃত্যু হত তাঁদের। রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও এই মুহূর্তে তেমনই গুরুতর সংকট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.