সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) মিসাইল ঘাঁটি তৈরি করছে চিন! সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে জাপানের এক শীর্ষ সংবাদমাধ্যম। এহেন খবরের জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সেই বিষয়ে এবার বেজিংয়ের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
রবিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “চিন কখনও অন্য কোনও দেশের ভিতর সামরিক ঘাঁটি তৈরি করে না। তবে কোনও দেশ চাইলে সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে চিন সহায়তা দিয়ে থাকে।” ঢাকায় ‘স্প্রিং ডায়ালগ উইথ চায়না’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চিনা দূতাবাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সম্পাদক ইনাম আহমেদ। এদিন ইউক্রেন ইস্যুতে চিনের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “রাশিয়া ও ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চিনের অবস্থা প্রায় একই ধরনের। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকটের সমাধান চাই। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই চিনের বন্ধু। আমরা উভয় দেশকেই পরামর্শ দিই আলোচনায় বসে এই সংকটের সমাধান করা প্রয়োজন।”
বহুদিন ধরেই বাংলাদেশের উপর ভারতের প্রভাব খর্ব করতে মরিয়া চিন। অতীতে চিনের কাছ থেকে যুদ্ধজাহাজ-সহ বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে ঢাকা। ফলে হাসিনা প্রশাসনের সঙ্গে অনেকাংশে সম্পর্ক মজবুত করেছে বেজিং। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, নিজের বক্তব্যে সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণের অছিলায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশে চিনা সামরিক গতিবিধির সম্ভাবনা নাকচ করেননি লি জিমিং।
পরোক্ষে ভারতকে নিশানা করে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি কোয়াড-সহ এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিভিন্ন উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে চিন বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত জিমিং। এসব উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেবে বলেই বেজিংয়ের প্রত্যাশা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বৃহৎ প্রকল্প নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ একটি বড় সমস্যা। চিনা প্রকল্পগুলো এই সমস্যা মোকাবিলা করছে। কর্ণফুলি টানেল, পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন হতে চলেছে।”
এদিকে, উইঘুরে মুসলিম নির্যাতন ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও মুখ খোলেন চিনা রাষ্ট্রদূত। তাঁর দাবি, উইঘুর সমস্যা আসলে পশ্চিমের দেশগুলির অপপ্রচার। উইঘুর ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের তদন্তের উদ্যোগকে স্বাগত জানায় চিন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে লি জিমিং বলেন, চিন রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চায়। রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে চিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.