সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ভারত বিদ্বেষে’র বাংলাদেশে ভারতের ঋণই ভরসা! দিল্লি টাকা না পাঠানোয় পদ্মপাড়ে থমকে একাধিক রেল প্রকল্প। ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়েও ঋণ না দেওয়ার অভিযোগ আনল বাংলাদেশ। ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছয় বছর আগে বাংলাদেশ রেলের একাধিক প্রকল্পের জন্য ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু আজ অবধি সেই টাকা পায়নি ঢাকা। এর ফলে ওই প্রকল্পগুলির কাজ থমকে গিয়েছে। এই বিষয়ে একাধিক বার নরেন্দ্র মোদি সরকারকে চিঠি দিয়েও লাভ হয়নি। যদিও পালটা প্রশ্ন উঠছে, হাসিনা পরবর্তী সময়ে যে ভারতকে কথায় কথায় বিষোদগার করছে মহম্মদ ইউনুস সরকার এবং পদ্মাপাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি, কোন ভরসায় তাদের অর্থসাহায্য করবে ভারত?
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের অনুদানের উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে এই মুহূর্তে রেলের সাতটি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে হাসিনার শাসনকালে অনুমোদন মিলেছিল খুলনা-দর্শনা যুগ্ম লাইন রেল প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মিশ্র গেজ লাইন প্রকল্পের। দুই প্রকল্পেই ভারত ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও টাকা আসেনি বলে অভিযোগ। ফলে কাজ শুরু করা যায়নি। এছাড়াও ভারতের ঋণের টাকায় খুলনা-মোংলা রেলপথ (২০১০ সালে অনুমোদিত) এবং আখাউড়া-আগরতলা (২০১৬ সালে অনুমোদিত) লাইনের কাজ হয়েছে। এই দুই প্রকল্পের পুরোপুরি সমাপ্তি ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ সরকার। খুলনা-মোংলা লাইনে একটি ট্রেন চলে। আখাউড়া-আগরতলা লাইনে এখনও ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। আরও একটি প্রকল্প দিনাজপুর-কাউনিয়া লাইনের (২০১৮ সালে অনুমোদিত) কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশ রেলের আরও বড় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে ঢাকা-টঙ্গী লাইন নিয়ে। যেটির তৃতীয় ও চতুর্থ লাইনের কাজ এগিয়েছে ৩৮ শতাংশ। এছাড়া কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ নির্মাণের কাজ এগিয়েছে ৫১ শতাংশ। নেপথ্যে পদ্মাপাড়ের রাজনৈতিক পালাবদল। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর পর গোটা দেশে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলার ভয়ংকর অবনতি হয়। তখনই রেল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় শ্রমিকেরা প্রাণ বাঁচাতে দেশে ফেরেন। বাংলাদেশ রেলের বক্তব্য, ওই ভারতীয় শ্রমিকদের অধিকাংশই এখনও বাংলাদেশে যাননি। ফলে এই দুই প্রকল্পের কাজও থমকে রয়েছে।
প্রথম আলো জানিয়েছে, ঢাকা-টঙ্গী এবং কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রকল্পের ঋণের টাকা দেবে কি না, তা জানতে চেয়ে গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। যদিও কোনও উত্তর আসেনি এখনও পর্যন্ত। ঠিক এখানেই ঢাকার দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যে বাংলাদেশ নিয়মিত ‘ভারত বিদ্বেষ ছড়ানো অভ্যেস করে ফেলেছে, সেখানে রেল প্রকল্পে অর্থসাহায্য করবে কেন নয়াদিল্লি! এমনকী যেখানে প্রতিবেশী দেশ দখল করারও হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা, সেখানে কোন ভরসায় ফিরবেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকরা?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.