সুকুমার সরকার, ঢাকা: লকডাউনের নিয়ম শিথিল করে দেওয়ার পর বাংলাদেশে ক্রমেই বাড়ছে সংক্রমণের মাত্রা। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন ৪২ জন। এদিকে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবারই চিন থেকে ১০ জন চিকিৎসকের দল (Medical team) ঢাকা এসে পৌঁছয়। করোনা মোকাবিলায় এই দলের সদস্যরা বিশেষ পারদর্শী বলে জানা যায়।
লকডাউন তুলে দেওয়ার ফলে রেকর্ড সংক্রমণ হচ্ছে বাংলাদেশে। জীবন-জীবীকার টানে পথে বেরিয়ে রোজই আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। ফলে শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের। তাঁদের সামাল দিতে গিয়ে রেহাই পাচ্ছেন না চিকিৎসক থেকে পুলিশ কেউই। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৩৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। ফলে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ৬৮ হাজার ৪০৭ জন। সপ্তাহের শুরুর দিনই করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। ঢাকার কাকরাইলের ইসলামি ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ডা. সাখাওয়াত হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কনস্টেবল মো. আলমগির হোসেনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। ফলে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯৩০জন।
সোমবারই বাংলাদেশের সহায়তায় চিন থেকে ১০ জন চিকিৎসকের দল ঢাকা এসে পৌঁছয়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানান বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন () ও চিনের রাষ্ট্রদূত। জানা যায়, এই চিকিৎসক দলের অধিকাংশ চিকিৎসকই চিনের হাইনান প্রদেশের। তাঁরা বাংলাদেশের বিশেষ কয়েকটি হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও কয়েকটি নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন। করোনা রোধে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁরা বিশদে আলোচনা করবেন ও এই রোগ নিরাময়ে কারিগরি পরামর্শ দেবেন। চিনা দূতাবাস জানায় যে, বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগেই চিনা মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ দলটি পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। ওই দলের সদস্যরা ভাইরাসের বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসাতেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন। বিশেষজ্ঞদের কথায়, “মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা দক্ষভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আশা করছি, এ দেশের চিকিৎসকরা আমাদের সহযোগিতা করবেন।”
গত ২০ মে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনে কথা হয়। তখনই চিনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে চিকিৎসকের দল পাঠানোর প্রস্তা্ব দেন। করোনা আবহে বাংলদেশের প্রতি চিনের এই সহমর্মিতা নিয়েও জোর জল্পনা চলছে কূটনৈতিক মহলে। তবে সেই বিষয়কে আমল না দিয়ে এই দুঃসময়ে বাংলাদেশের ‘বন্ধু’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে চিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.