সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের বাসভবন যমুনার দিকে গিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মিছিল। যা ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ছোড়ে পুলিশ। লাঠিপেটা করা হয় ছাত্রদের। রেয়াত করা হয়নি শিক্ষকদেরও। পুলিশের মারে আহত হন প্রায় ৫০ জন। তারপর থেকে প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে অবস্থান কর্মসূচির পর গণ-অনশনে বসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় অনশন শুরু করেন তাঁরা। সঙ্গে রয়েছেন শিক্ষকরাও।
জানা গিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ার আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন। তিনি বলেন, “আমরা এখান থেকে একচুল সরব না। আমাদের রক্তের উপরে প্রতিষ্ঠিত সরকার যদি চোখ রাঙিয়ে কথা বলে, হুমকি-ধমকি দেয়, যদি স্টিম রোলার চালানোর চেষ্টা করে তাহলে সেটাকে রুখে দেব। এই আন্দোলন তখন কাকরাইল পয়েন্টে সীমাবদ্ধ থাকবে না।” এক সময়ে সমাবেশে যোগ দিতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বাসে আসেন। এজন্য মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ অধ্যাপক রইছ উদ্দীন গণ অনশন কর্মসূচি ও সমাবেশের ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেন। বুধবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার অভিমুখে লংমার্চ নিয়ে যাওয়ার সময় কাকরাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ৫০ শিক্ষক-পড়ুয়া আহত হন। তারপর ওইদিন দুপুর থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এই তিন দফা দাবি হল-
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।
২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে। এই দাবিতে ইউনুসের বাসভবনের দিকে যেতে গিয়েই রক্তাক্ত হতে হল ছাত্র ও শিক্ষকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.