সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ISI)। একইসঙ্গে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে জেহাদের বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছে পাক গোয়েন্দা সংস্থাটি।
জানা গিয়েছে, মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের আইএসআই। আরসা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টালিজেন্স ও তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির যোগ দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালের আগস্টে আরসা মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর পর থেকেই সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়। যার কারণে পরবর্তীতে সাড়ে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) এসে আশ্রয় নেয়। এর আগে চার লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর মোট সংখ্যা ১১ লক্ষ। ২০১৮ সালের মে মাসে মায়ানমারের রাখাইনে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ওপর অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদীদের ভয়াবহ নির্যাতনের কথা তুলে ধরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মানবাধিকার সংগঠনটির প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য এবং চিত্র-সহ এর পক্ষে প্রমাণ তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি বা আরসা ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ওপর । আরসার বিরুদ্ধে প্রায় একশ হিন্দুকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অনেক শিশু ও নারী ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য গ্রামে ডাকাতির অভিযোগও রয়েছে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। আবারও আরসা নিয়ে নতুন করে পশ্চিমের সংবাদমাধ্যমের নজর এসেছে। সম্প্রতি জার্মানির ডয়েচভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কিছুদিন ধরেই আরসা বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরমপন্থী মনোভাব তৈরির চেষ্টা করছে। এর আগে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে মায়ানমার অভিযোগ করে, রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির থেকে ঘরে ফিরে যেতে বাঁধা দিচ্ছে আরসা। আরসার ব্যাপারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, গোষ্ঠীর নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনজুনি পাকিস্তানের করাচিতে জন্মগ্রহণ করেছিল এবং পরে তার পরিবার রাখাইনে চলে আসে। সে সময় আতাউল্লাহ সৌদি আরবে গিয়ে কেরানির কাজ শুরু করে। ব্রাসেলসের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে দাবি করা হয়, সৌদি আরবে বসবাসরত রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আরসা পরিচালিত হয় এবং এর সদস্যরা আধুনিক গেরিলা যুদ্ধকৌশলে পারদর্শী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.