সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রবল বেগে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। প্রকৃতির রুদ্র রূপে আতঙ্কিত বাংলাদেশ। বিশেষ করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঝড়েক মোকাবিলায় তৎপরতা তুঙ্গে।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে কক্সবাজারে আবহাওয়ার অবনতি ঘটছে। আজ শনিবার সকাল সাতটা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবার সন্ধে সাতটা পর্যন্ত এই রুটে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, মোকার কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার থেকে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। ‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাতের আশঙ্কা আছে।
আগামীকাল রবিবার সকাল ৬ টার থেকে ১৫ মে সকাল ৬ টার মধ্যে বাংলাদেশে (Bangladesh) আঘাত হানতে পারে মোকা। এমনটাই জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। মোকা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ মোকাবেলায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখতে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে পাহাড়ের ওপরে ও পাদদেশে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওযা হবে। এর জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের নিকটবর্তী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত-সহ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি বিষয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সভায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার সব ধরনের প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভূমিধস ও বন্যায় প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-সহ রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছ্বাসেবক, রেডক্রিসেন্ট-সহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, পুলিশ সেখানে সমন্বিতভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.