ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টেও এবার করোনা ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গেল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টে ৫৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (CMH) মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর তাঁর শরীরের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
রাতে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ড. আনিসুজ্জামানের শরীরে করোনার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। পরে ড. আনিসুজ্জামানের ছোট ভাই আখতারুজ্জামান এই কথা সাংবাদিকদের জানান। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গুণমুগ্ধদের রেখে যাওয়া জনপ্রিয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখেও ভুগছিলেন তিনি।
আচমকা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৭ এপ্রিল বরেণ্য এই শিক্ষাবিদকে প্রথমে ঢাকার ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। তাঁর হার্ট, কিডনি, ফুসফুস, উচ্চ রক্তচাপ ও পারকিনসন ডিজিজ-সহ নানা শারীরিক জটিলতা ছিল। এই হাসপাতাল থেকে পরে তাঁকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে গত ১০ মে তাঁর লালা রসের নমুনা নিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হয়। তখন সেই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু, মৃত্যুর পর করা পরীক্ষার রিপোর্টে এই মারণ ভাইরাসের হদিশ মিলল।
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার বাড়ি বসিরহাটে। তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরুও হয়েছিল কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে। ভারত ভাগের পর তাঁর পরিবার বাংলাদেশ চলে আসেন। তিনি ছয় দশকেরও বেশি সময় শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ পরবর্তী প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। এছাড়া ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আনিসুজ্জামানের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.