ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনের রহস্যজট এখনও খোলেনি। তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি দেহাংশও। এর মাঝেই এবার সাংসদকে হত্যার দায় স্বীকার করল তানভির ভূঁইয়া। সে খুলনা অঞ্চলের চরমপন্থী নেতা হিসাবেই পরিচিত। একাধিক হত্যা মামলায় অভিযোগ রয়েছে তানভির বিরুদ্ধে। গরাদের পিছনেও গিয়েছে একাধিকবার।
গত ৩১ মে তানভির ভুঁইয়া ওরফে ফয়সাল আলি সাজি, শিলাস্তি রহমান ও শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। সেই রিমান্ড চলাকালে মঙ্গলবার তানভিরকে আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আনোয়ারুল হত্যায় এনিয়ে দুজন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিল। এর আগে গত শুক্রবার খুনের মাস্টারমাইন্ড মার্কিন প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহিনের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শিলাস্তি রহমান খুনের দায় স্বীকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, আনোয়ারুলকে খুনের পরিকল্পনা মতো বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ৬ মে কলকাতা যায় তানভির। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দেশে ফেরে ১৬ মে। তানভির ও অন্যান্য পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আনোয়ারুলকে হানিট্রাপে ফেলে নিউটাউনে নিয়ে যায়। এই তানভির মূল ষড়যন্ত্রকারী শাহিনের প্রধান সহায়ক শিমুল ভুঁইয়ার ভাইপো। এর পর তাকে জেলে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
এদিকে, আনোয়ারুলের হত্যায় এক তরুণী-সহ আরও তিন জনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশের তদন্ত সংস্থা ডিবি। তাঁদের নাম- তাজ মহম্মদ খান ওরফে হাজি, মহম্মদ জামাল হোসেন ও চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া নামের এক তরুণী। জানা গিয়েছে, এই মামলার তদন্তকারীরা ১০ অভিযুক্তের ব্যাঙ্কের হিসেবের তথ্য পেতে আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই তালিকায় রয়েছে ওই তিনজনের নাম। যদিও চেরি ছাড়া এর আগে বাকিদের নাম আলোচনায় ছিল না। এই চেরি ওরফে আরিয়াকেও মূল অভিযুক্ত শাহিনের বান্ধবী হিসেবে চেনে সবাই। আনোয়ারুলকে ১৩ মে হত্যার আগে প্রথম দফায় কলকাতায় এই আরিয়াকে নিয়ে গিয়েছিলেন শাহিন।
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, যেহেতু কলকাতায় বাংলাদেশি সাংসদ খুন হয়েছেন তাই ঘটনার তদন্তভার ভারতেরই। এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই যৌথভাবে দুদেশ তদন্ত করছিল। অভিযুক্ত সিয়ামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছে কলকাতা পুলিশও। সেই মতোই সিয়ামকে ভারতের কাছেই হস্তান্তর করেছে নেপাল পুলিশ। কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হোটেল, যেখানে সিয়াম এবং আখতারুজ্জামান শাহিন ছিলেন সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে অভিযুক্তকে ছাড়াই ঢাকায় ফিরছে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মহম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্তকারী দলটি। এদিকে কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে আনোয়ারুলের দেহাংশ খুঁজতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.