সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে কিছুতেই থামছে না করোনার মৃত্যুমিছিল। এবার এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশির। শনিবার রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শিল্পী বশিরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার পৃথক বার্তায় শোকপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, “মুর্তজা বশিরের মৃত্যু দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার সৃষ্টি ও কর্ম তরুণ প্রজন্মের জন্য চিরকাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।” শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের চিত্রকলার বিকাশে মুর্তজা বশির যে অনন্য অবদান রেখেছেন তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্ররেণা যুগিয়ে যাবে।” এদিকে, শিল্পীর মেয়ে মুনিরা বশির জানান, সকাল ৯টা ১০মিনিটে মুর্তজা বশির মারা যান।
প্রখ্যাত ভাষাবিদ ড. মহম্মদ শহিদুল্লার ছেলে মুর্তজা বশিরের জন্ম হয় ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট। তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী, ভাষা সংগ্রামী, গবেষক ও ঔপন্যাসিক। মহান ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণের পর রক্তাক্ত আবুল বরকতকে যাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যান, মুর্তজা বশীরও তাঁদের মধ্যে ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। বাংলাদেশে বিমূর্ত বাস্তবতার চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ মুর্তজা বশীরের দেয়াল, শহিদ শিরোনাম, পাখা ছাড়াও বেশকিছু উল্লেখযোগ্য চিত্রমালা রয়েছে। পেইন্টিং ছাড়াও ম্যুরাল, ছাপচিত্রসহ চিত্রকলার বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি কাজ করেছেন।১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা উপন্যাস ‘আলট্রামেরিন’। মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন। চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান মুর্তজা বশীর; স্বাধীনতা পুরস্কার পান ২০১৯ সালে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.