সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘বাংলাদেশ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যোগ্য নয়।’ বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ছাত্র আন্দোলন দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় একথাই বললেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। পথদুর্ঘটনায় পড়ুয়াদের মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ‘নিরাপদ রাস্তার’ দাবিতে গণআন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা। রাস্তায় বসে পড়ে গাড়ি রুখে দিয়ে চলছে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষার পালা। সেই সঙ্গে পুলিশের লাঠি অগ্রাহ্য করেই চলছে জ্বালাময়ী স্লোগান। সোশ্যাল মিডিয়ার জেরে এই আন্দোলন এখন নেটিজেনদের নাগালে চলে এসেছে। সেসব দেখেই শনিবার ফেসবুকে এহেন মন্তব্য করলেন ‘লজ্জা’-র স্রষ্টা।
তসলিমা বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যোগ্য নয়। শিশুদের জন্য দেশটি উত্তম। শিশুরাই দেশ ভাল চালাতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক যারা আছেন, তাঁরা অধম।প্রাপ্তবয়স্কদের সত্যিকার প্রাপ্তবয়স্ক হতে হাজার বছর বাকি। লেখিকার এহেন মন্তব্যের পর নেটিজেনদের কমেন্টে উপচে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ সমালোচনায় সরব আবার কেউবা সহমত। তবে বহুদিন পরে লেখিকার সঙ্গে সহমতে এসেছেন তাঁরই দেশবাসী। কেউ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের শিশুরা বয়স্কদের বুঝিয়েছে তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন?’ কেউ লিখেছেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক যারা আছে, তারা অধম! বর্তমান প্রজন্ম যেদিন নেতৃত্ব দেবে সেদিন দুর্নীতি ও কমে যাবে, মন্দের সংখ্যাও কমে যাবে।’
তবে অপ্রতিরোধ্য ছাত্র আন্দোলেন পুলিশি জুলুম অব্যাহত রয়েছে। সঙ্গে শাসকদল আওয়ামি লিগের কর্মীরাও আন্দোলনরত ছাত্রদের দিকে মারমুখী হয়ে তেরে আসছে বলে অভিযোগ। এর জেরেই এদিন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজধানীর জিগাতলা এলাকা। আন্দোলকারীদের অভিযোগ, নিরাপদ রাস্তার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে শাসকদলের ফ্রন্ট ছাত্রলিগ, যুবলিগ ও পুলিশ। শিক্ষার্থীরা সেখানে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের কাজ করছিলেন। শনিবার দুপুর দু’টোর দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গেটের সামনে শিক্ষার্থীদের উপরে আচমকা হামলা চালানো হয়ে বলে অভিযোগ। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিরস্ত্র ছাত্রছাত্রীদের উপরে লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুবলিগের কর্মীরা। ইট ছোঁড়ার পাশাপাশি গুলি চালানো হয়।এদিকে ছাত্রদের অভিযোগ মানতে রাজি নন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দুষ্কৃতীরা দেশকে অশান্ত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের বেশ ধরে আওয়ামি লিগ অফিসে হামলা চালিয়েছে। হামলায় আওয়ামি লিগের ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এই হামলার নেপথ্যে বিএনপি-জামাতের লোকজন রয়েছে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.