সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছতে রীতিমত ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চলছে ওপার বাংলায়। ‘নতুন’ বাংলাদেশে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েহে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি। রেহাই পায়নি বিখ্যাত বায়তুল আমান ভবন। ইতিহাস বলে, বাহান্নর ভাষা আন্দলনের সূচনা হয়েছিল এই বাড়ি থেকেই। এবার মহম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশে ভাঙা হল ভাষা আন্দোলনের শহিদ বেদি! সেই ঘটনার ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘কাঁদো বাংলাদেশ কাঁদো।’
গতকাল ছিল আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস। কিন্তু বাঙালি জাতিসত্তা ভুলে দিকে দিকে বসে উর্দু কাওয়ালি গানের আসর! বাংলা ভাষার জন্য যে দেশে রক্ত ঝরিয়েছে বাঙালি, ধ্বনি উঠেছিল ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান’, সেই দেশেই এখন ‘পাক প্রেমে’র হাওয়া বইছে। আর এর নেপথ্যে ইউনুস ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। যাদের মদত দিচ্ছে জামাতের মতো মৌলবাদী দল বলেই অভিযোগ। শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে এবছর বদলে গিয়েছে ভাষা দিবসের রীতিও। এই পরিস্থিতিতে গতকাল তসলিমা ফেসবুকে দুটি পোস্ট করেন। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি মাঠের মাঝখানে তৈরি ভাষা আন্দোলনের শহিদ বেদি ভেঙে পড়ে রয়েছে। এই ছবির ক্যাপশনেই লেখিকা লিখেছেন, ‘কাঁদো বাংলাদেশ কাঁদো।’
তসলিমার পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন ছাত্র মিলে হাতুড়ি দিয়ে মেরে ভাষা আন্দোলনের শহিদ বেদি ভাঙছে (যদিও এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল)। তাদের চোখেমুখে ছিল উল্লাস। এই ভিডিওটির ক্যাপশনে তসলিমা লেখেন, ‘এখনও কি সময় আসেনি এইসব বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে ওঠার? এই ক্ষুদে শয়তানগুলো , এই নির্বোধ পথভ্রষ্টগুলো কি জানে যে তারা নিজের মাথায় কুড়োল মারছে?’ তসলিমার এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, এটাই কি ইউনুসের ‘নতুন’ বাংলাদেশ?
গত বছরের ৫ আগস্ট যেভাবে ‘হাসিনা হঠাও অভিযানে’ নেমেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তখনই খানিক আঁচ করা গিয়েছিল আগামীর বাংলাদেশ কী রূপ নিতে চলেছে। এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্বিচারে অত্যাচার, লাগাতার মন্দিরে ভাঙচুর, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বললেই শাস্তি তারই প্রমাণ। বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন থেকে, জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’র বদলের দাবি উঠছে প্রতিনিয়ত। মুছে ফেলার চেষ্টা চলছ রবীন্দ্রনাথ, নজরুলকে। এখন পাঠ্যবইতে জায়গা পাচ্ছে উর্দু, আরবি ভাষাও। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, সব কিছুরই প্রাণকেন্দ্র সেখানে সন্ধ্যা নামলে এখন উর্দু কাওয়ালির আসর বসে। জুলাই ও আগস্ট মাসের ‘গণঅভ্যুত্থানে’ শহিদদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাঁকজমকপূর্ণ কাওয়ালি গানের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই আসরে সিলসিলা এবং ক্বাসীদা ব্যান্ড কাওয়ালি পরিবেশন করেছিল। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের প্রাক্কালেও এর অন্যথা হয়নি বলেই খবর। শোনা গিয়েছে সেই কাওয়ালি গানই। এবার ভাষা আন্দোলনের শহিদ বেদি ভাঙার ছবি প্রকাশ্যে এল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.