সুকুমার সরকার, ঢাকা: নির্বাচন রুখতে বাংলাদেশে (Bangladesh) চরম সন্ত্রাস শুরু করেছে বিরোধী বিএনপি-জামাত। রবিবার ভোটের আগে শুক্রবার রাতে ঢাকার (Dhaka) গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। তাতে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের একজন এলিনা ইয়াসমিন। বাবার শেষকৃত্য সেরে ঢাকা ফেরার পথে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে ২ শিশু-সহ তাঁর মৃত্যু হয়। এছাড়া বাসেও আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছে বেশ কয়েকজন। মূলতঃ বিরোধী দল বিএনপি (BNP)ও তাদের সঙ্গী জামাত বন্ধ-অবরোধ সফল করতে বাসে, ট্রেনে আগুন লাগিয়ে সাধারণের মাঝে ভীতি ছড়াতে এই পথ বেছে নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই সন্ত্রাস রুখে নির্বিঘ্নে নির্বাচনের ডাক দিয়েছে শাসকদল আওয়ামি লিগ।
বিএনপি-র আগুন সন্ত্রাসের শিকার হলেন পদ্মাপাড়ের জেলা রাজবাড়ির এলিনা ইয়াসমিন। তিনি বাবার সমাধি শেষে ভাইদের সঙ্গে সন্তানকে নিয়ে রাজবাড়ী থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা ফিরছিলেন। ট্রেনের আগুনে (Fire)পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় এলিনার দেহ। তবে প্রাণে বেঁচেছে তাঁর পাঁচ মাসের শিশু সৈয়দ আরফান। এলিনার স্বামী সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন ঢাকার বাসায় ছিলেন। সাজ্জাদের বড় ভাই মুরাদ হোসেন জানান, এলিনা তাঁর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। ১০ দিন আগে এলিনার বাবা মারা গিয়েছেন। ছেলেকে নিয়ে তিনি বাড়ি গিয়েছিলেন। তার পরই এমন ঘটনা।
ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপ-পরিদর্শক সেতাফুর রহমান জানান, এলিনার দেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। এদের মধ্যে পুরুষ, শিশু ও নারী রয়েছে। আগুন লাগার পর জ্বলন্ত ট্রেনের জানলা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন এলিনা। পারলেন না। আটকে গেলেন জানলায়। বাইরে থেকে কিছু লোক মরিয়া হয়ে তাঁকে বের করার চেষ্টা চালান। সবই ব্যর্থ। জ্বলন্ত ট্রেনের আগুন গ্রাস করে তাঁকে। ট্রেনের জানালা ভেঙে পড়ে। তিনি আটকে যান। দমকল বিভাগের আটটি ইউনিটের নিরলস চেষ্টায় রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, ‘রেললাইনের পাশেই আমার বাসা। ট্রেনে আগুন লাগার সময় বাসায়ই ছিলাম। একজন ফোনে এই আগুন লাগার খবর জানায়। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসি। ততক্ষণে ‘চ’ নম্বর বগির ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। একজন জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দূর থেকে বাঁশ দিয়ে জানালাটা সরানোর চেষ্টা করছিলাম, যাতে তিনি বের হতে পারেন। আমরা তাঁকে বের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। কারণ সব কিছু অনেক গরম। কোনও কিছুই ধরা যাচ্ছিল না।’’ মাসুদ রানা বলেন, ‘ছ’ নম্বর বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন পানি ছিটিয়ে নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও দুটি বগিই একেবারে পুড়ে গেছে। বগি দুটিতে এসি থাকায় আগুনে বেশি পুড়েছে। দুই বগির পাশেই ছিল পাওয়ার কেবলর কার বগি। রেলওয়ের কর্মীরা এসেও খুলতে ব্যর্থ হন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.