শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: ঘড়ির কাঁটা ভোর পাঁচটা ছুঁইছুঁই। কুয়াশায় ঘিরে রেখেছে গোটা এলাকা। তার মধ্যেই অতি সতর্ক পুলিশ। ফরাক্কা ব্যারেজ পেরলেই গাড়িতে-গাড়িতে চলছিল তল্লাশি। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা গাড়িতে কড়া নজর রেখেছিল তারা। তল্লাশি চলাকালীন হঠাৎই একটি ছোট গাড়িতে চোখ আটকায় পুলিশের। দেখেন, বছর তিরিশের লাস্যময়ী যুবতী বসে আছেন গাড়ির মাঝের আসনে। তাকে তল্লাশি করতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। উদ্ধার হয় প্রচুর জালনোট। বাজেয়াপ্ত নোটগুলি পাকিস্তানে তৈরি বলে সূত্রের খবর।
পুলিশের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল, পাচারকারীরা কোনও মহিলাকে দিয়ে জালনোট পাচার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ফলে গাড়িতে বসা যুবতীটিকে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। পরনে হালকা বাদামি রংয়ের চূড়িদার। উপরে সোয়েটার। দেখে সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে বলেই মনে হয়েছিল পুলিশের। তবে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। মেয়েটির পায়ের উপরে থাকা ব্যাগটি খুলতেই পর্দাফাঁস। শনিবার মুর্শিদাবাদ পুলিশের জালে ধরা পড়ে জালনোট পাচারকারী। উদ্ধার হয় ৪ লক্ষ টাকার জালনোট।
ধৃতের নাম সঞ্জিমা খাতুন (৩০)। বাড়ি মালদহের কালিয়াচকের পুরাতন বাবুহাট। বছর বারো আগে সঞ্জিমা খাতুনের বিয়ে হয়। দু’বছরের মাথায় বিবাহবিচ্ছেদ। জালনোট-সহ সঞ্জিমা খাতুন ধরা পড়ার পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। কীভাবে একজন যুবতী এই জালনোট পাচার চক্রে জড়িয়ে পড়ল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। ঘটনা প্রসঙ্গে ফরাক্কা থানার আইসি দেবব্রত চক্রবর্তী জানান, “গোপন সূএে খবর পাই, এক মহিলা জালনোট নিয়ে ফরাক্কার দিকে আসছে। খবর মেলার পর নিউ ফরাক্কায় নাকা চেকিং শুরু হয়। একটি বাসে এক যুবতীকে সন্দেহবশত আটকও করা হয়।” তিনি আরও জানান, তল্লাশি চালিয়ে ব্যাগ থেকে আট বান্ডিল পাঁচশো টাকার নোট হয়। ৮০০ পিস নোটের মোট মূল্য মোট ৪ লক্ষ টাকা।
নিউ ফরাক্কা জংশন স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে পাটনা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল যুবতীটির বলে জানা গিয়েছে। ধৃতকে শনিবার দুপুরে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। ধৃত যুবতীটিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জালনোট পাচার চক্রের পান্ডাদের খোঁজে নেমেছে ফরাক্কা থানার পুলিশ। যদিও তদন্তের স্বার্থে ধৃত যুবতীর সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.