অর্ণব দাস, বারাকপুর: উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে একই পরিবারের ৪ জনের রহস্যমৃত্যুর পরতে পরতে রহস্য। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে ফেসবুকও করতে দিতেন না বৃন্দাবন কর্মকার। এছাড়া আর্থিক সমস্যা তো ছিলই। তবে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে কেন্দ্র করে দাম্পত্যকলহ চরমে পৌঁছেছিল বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার খড়দহ (Khardah) বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতাল সংলগ্ন মধুসূদন মুখার্জি রোডের করবী টাওয়ার্সের দোতলায় একই পরিবারের তিনজনকে খুন করে গৃহকর্তা আত্মঘাতী হন। সুইসাইড নোটে মৃত বৃন্দাবন কর্মকার স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পাশাপাশি একাধিক বিষয় লিখেছিলেন। ওই সুইসাইড নোটের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে। সুইসাইড নোটের লেখাটি বৃন্দাবনের হাতের লেখা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বয়ানে উল্লেখিত বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি যাচাই করছে পুলিশ। পাশাপাশি স্থানীয় এবং পরিচিতদের সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক মাস ধরে মৃতা দেবশ্রী ফেসবুক ব্যবহার করেননি। অনুমান, অত্যাধিক সন্দেহে স্ত্রীকে চাপ দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করতে বন্ধ করিয়েছিলেন বৃন্দাবন।
স্থানীয়রা জানান, শেষ কিছুদিন ধরে তাদের ফ্ল্যাটে ঝগড়ার শুনেছিলেন তারা। শুক্রবার গভীর রাতে মেয়ে দেবলীনার চিৎকারও শুনেছিলেন অনেকে। রবিবার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকে পচা দুর্গন্ধ পেয়ে অনেক ডাকাডাকি করেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে শেষে বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলারকে জানানো হয়। কাউন্সিলারের থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে খড়দহ থানার পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই নৃশংসতার চিত্র দেখে হতবাক হন। দরজার খুলতেই প্রথমে দেখা যায় মেঝেতে পরে স্ত্রী দেবশ্রীর পচাগলা দেহ। তার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন, মেজেতে রক্তের ছাপ। বাকি দুটি ঘরের একটিতে দুই সন্তানের মৃতদেহ। তাদের শরীরেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত। আর রাস্তার ধারের ঘরে ছিল বৃন্দাবনের ঝুলন্ত দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে প্রথমে কিছু খাইয়ে পরে তাঁদের তিনজনকেই ধারালো কিছু দিয়ে কুপিয়ে খুন করে বৃন্দাবন। তারপর সে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.