সুমিত বিশ্বাস ও অমিতলাল সিং দেও, পুরুলিয়া: বাঘিনী আতঙ্কে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলি সংলগ্ন গ্রামগুলি ভয়ে থাকলেও রীতিমত ঝুঁকি নিয়েই গবাদি পশু জঙ্গলে পাঠাচ্ছে। না হলে ঘরে বা গ্রামের উঠোনে তাদের খাবার মিলবে কি করে? এরই মধ্যে নিখোঁজ ছাগলের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে দাঁড়ালো ৫০। ওই এলাকার প্রাণীপালন করা মানুষজনের এখন আতঙ্কের সঙ্গে হা-হুতাশও করছেন। কারণ ওই বাংলার কালো ছাগলই তাদের রুটিরুজির পথ ছিল। পাহাড়তলির গ্রামবাসীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাহামদা গ্রামে ২০ টি, কেন্দাপাড়ায় ১৩ টি ও যমুনাগোড়ায় ১৭ টি ছাগল নিখোঁজ রয়েছে। এসবই যে বাঘিনীর পেটে গিয়েছে তা নয়।
ওই জঙ্গলে রয়েছে নেকড়েও। জঙ্গলের রাজা বাঘ চলে আসায় নেকড়ের দল ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। ঘন জঙ্গল থেকে তারা সামনের দিকে চলে আসায় হাতের কাছে শিকার পেয়ে একের পর এক ছাগল মারা যাচ্ছে বলে অনুমান করছে কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগ। ওই বন বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো বলেন, “এই বিষয়ে আমরা স্পট ক্ষতিপূরণ দেব। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জার ও বিট অফিসার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।”
গত রবিবার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাঘিনী জিনাত ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি এলাকা থেকে ময়ূরঝর্ণা হয়ে বান্দোয়ানে ঢুকে পড়ে। সেদিনই বনদপ্তর পাহাড়তলির মানুষজনদেরকে মাইকিং করে সতর্ক ও সচেতন করেছিল। এরপর সোমবার থেকে গবাদি পশু জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া একপ্রকার বন্ধই করে দেন ওই এলাকার মানুষজন। সোমবার রাতে ওই বাঘের কোন গতিবিধি না পাওয়ায় মঙ্গলবার আবার গবাদি পশু জঙ্গলে পাঠাতেই কাল হয় ওই এলাকার মানুষজনদের। এখন বাঘিনী আতঙ্ক চেপে বসলেও জীবন-জীবিকার কথা মাথায় রেখে তাদেরকে এক প্রকার জঙ্গলে পাঠাতে বাধ্যই হচ্ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ ছাগলের সংখ্যা ছিল ২০ টি। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আরও ৩০ টি বাড়ল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.