দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যের বিভিন্ন ভাতা, চাকরি ও প্রকল্পে কাটমানির অভিযোগ নতুন নয়। বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে অসহায় মানুষের কাছে টাকা চাওয়ার অভিযোগ আকছার পাওয়া যায়। কাটমানির সেই মুকুটে যোগ হল আর একটি কলঙ্কিত পালক। সরকারি পলিটেকনিক কলেজের দরিদ্র পড়ুয়াদের কাছে প্লেসমেন্টের বদলে চাওয়া হল টাকা! সোমবার কলকাতার এপিসি পলিটেকনিকের (Acharya Prafulla Chandra Roy Polytechnic) ২১ জন ছাত্রর কাছে প্লেসমেন্টের নামে আট হাজার করে টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। যদিও কেউ টাকা দিতে রাজি হয়নি।
পলিটেকনিক কলেজগুলিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি সংস্থাগুলি ক্যাম্পাসিংয়ে আসে। স্বতঃপ্রণোদিতভাবেও কিছু সংস্থা কলেজে চিঠি পাঠিয়ে পড়ুয়াদের ডাকে। কিছুদিন আগে এপিসি পলিটেকনিকে দুর্গাপুরের (Durgapur) সুপার স্টিল আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে চিঠি এসেছিল। চিঠিতে বলা হয়েছিল, মেকানিক্যাল এবং সিভিলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ করা হবে। প্রত্যেক ছাত্রর কাছে ৮০০০ টাকা করে চাওয়াও হয়েছিল সেই চিঠিতে। সোমবার ২১ জন ছাত্র দুর্গাপুরে যায়। কথামতো তাঁরা টাকা নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সংস্থার তরফে যে ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা ফোনে জানিয়েছিলেন তিনি কোনও একজন ছাত্রের কাছ থেকে সবার টাকা নেবেন বলেন জানান। তিনি বলেন, টাকা দিতে হবে দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে। তখনই সন্দেহ হয়। প্রত্যেকেই কারখানার ভিতরে গিয়ে নিয়োগপত্র পাওয়ার পর টাকা দেবে বলে জানায়। ছাত্রদের বক্তব্য জানার পর সুরজিৎ সরকার নামে সেই ব্যক্তি আর যোগাযোগ করেনি।
প্রশ্ন উঠেছে, টাকা চাওয়ার পরেও কেন সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের দুর্গাপুর পাঠিয়েছিল। এখানেই দেখা দিয়েছে সন্দেহ। তাহলে কি ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া কাটমানির একটি অংশ কলেজের কারও কাছেও পৌঁছে যেত? ট্রেনিং অ্যান্ড প্লেসমেন্ট অফিসার পার্থ চক্রবর্তী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে আমি সরাসরি সংস্থায় গিয়ে কথা বলে আসতে পারিনি। ই-মেল এসেছিল। তার ভিত্তিতে ছাত্রদের দুর্গাপুরে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট ব্যক্তির আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তারা টাকা দেয়নি।” কারিগরি শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, ওই ছাত্ররা কলেজে অভিযোগ জানালে তদন্ত শুরু হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.