শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বান্ধবীর সূত্র ধরে পরিচয়-ফোনালাপ। নিজেদের অজান্তেই একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন পুতুল ও কৃষ্ণ। রবিবার মধ্যরাতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জন্মান্ধ এই যুগল। চোখের আলোয় না, স্পর্শেই হল শুভদৃষ্টি। নববধূবেশে স্বামীর হাত ধরে রায়গঞ্জ থেকে হুগলির পান্ডুয়ায় রওনা দিলেন পুতুল।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাসিন্দা পুতুল মাহাতো। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হলেও ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। এদিকে হুগলির পান্ডুয়ার বাসিন্দা কৃষ্ণ দাস। পেশায় হকার। ট্রেনে আমলকি বিক্রি করেন। তবে দুজনের মিল একটাই, তাঁরা জন্মান্ধ। লাঠিকে ভরসা করেই এগোচ্ছিলেন জীবনে। ভাবেননি কোনওদিন কেউ এসে হাত ধরবে। কিন্তু ভাগ্যে যা লেখা, তা তো হবেই। এক বান্ধবীর মাধ্যমে পরিচয় হয় পুতুল ও কৃষ্ণের। কিছুদিন প্রেমের পরই এক হল চার হাত।
রায়গঞ্জ স্টেশনে স্বামীর হাতে হাত রেখে নববধূ পুতুলদেবী বললেন, “অনেক কষ্ট করে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুটা পড়াশোনা করেছি। ভেবেছিলাম, জীবনে একাই থাকব। কিন্তু আমার বান্ধবীর সাহায্যে আজ একজনকে পেলাম।” অন্যদিকে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে পাশে নিয়ে কৃষ্ণ বলেন, “পথ চলার লাঠি একমাত্র ভরসা ছিল। কিন্তু আজ আমার সহধর্মিনী আমার নতুন সঙ্গী।” জানা গিয়েছে, এই বিয়েতে সহযোগিতা করেছেন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতি, বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী থেকে শুরু করে রায়গঞ্জের পুরপ্রশাসক সন্দীপ বিশ্বাস। সেইসঙ্গে স্থানীয় পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর থেকে পাড়া প্রতিবেশীরাও এগিয়ে আসেন। বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রায় সাড়ে তিনশোজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.