বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: গাড়ি থেকে বিয়ে করতে নামার সময় বরের মুখে ছিল মাস্ক। হাতে ঘন ঘন মাখছেন স্যানিটাইজার। নতুন বরকে বরণ করার সময় বরণডালাতেও ছিল মাস্ক এবং স্যানিটাইজার। শুধুই কী তাই? বিয়েবাড়ির দরজা-সহ প্যান্ডেলের বিভিন্ন জায়গায় টাঙানো মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করার গুরুত্ব সম্পর্কে লেখা পোস্টার। এছাড়াও জায়গায় জায়গায় কোভিড বিধি পালনের পোস্টারও ছিল লাগানো। করোনা আবহে এমনই অভিনব বিয়ের সাক্ষী নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুরের গোবিন্দপুরের ঘোষপাড়ার গলায়দড়ি বটতলা।
বাহাদুরপুরের বাসিন্দা শুভাশিস ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দীপান্বিতার। আগেই হয়ে গিয়েছিল বিয়ের পাকা কথা। কিন্তু লকডাউনের জন্য দু’বার পিছিয়েছে বিয়ের তারিখ। তবে আনলক পর্ব শুরু হওয়ায় পাত্র-পাত্রী দু’পক্ষই আবার ঠিক করেন বিয়ের তারিখ। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধেয় নদিয়ার শান্তিপুরের গোবিন্দপুরের ঘোষপাড়ার গলায়দড়ি বটতলায় বিশ্বজিৎ ঘোষের বাড়িতে বসেছিল বিয়ের আসর।
যদিও বিয়ের পুরোহিত মনোতোষ চক্রবর্তী আগেই শর্ত দিয়েছিলেন জমায়েত হলে তিনি বিয়ের মন্ত্র পড়বেন না। পরিবর্তে কোভিড (Covid-19) বিধি মানলে তবেই তিনি বিয়ের মন্ত্র পড়বেন।
তবে এ বিষয়ে পাত্র ও পাত্রীর পরিবারও ভীষণ সচেতন। কোভিড বিধি মেনেই বিয়ে হবে বলে আগেই স্থির করেছিলেন তাঁরা। বিয়েবাড়িতে ঢোকার মুখে বরযাত্রী এবং নিমন্ত্রিতদের হাতে দেওয়া হয়েছে স্যানিটাইজার এবং মাস্ক। বরণডালাতেও বরণের বিভিন্ন সামগ্রীর সঙ্গে ছিল মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের ডালা। এমনকি ছাদনাতলাতে ভিড় করে বিয়ে দেখা ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। চক দিয়ে কাটা ছিল দশটি গোল বৃত্ত। মাস্ক পড়েই তুলতে হয়েছে সেলফি। যদিও তাতে পাত্রীর বান্ধবীদের কয়েকজনের মনখারাপ হয়েছিল। ভিড় এড়াতে সন্ধে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। ক্যাটারিং, আলো, মাইকের লোকজনকেও পড়তে হয়েছে মাস্ক।
পাত্রী দীপান্বিতার মা শিউলি ঘোষ এবং বাবা বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “এর আগে দু’বার বিয়ের তারিখ পিছিয়ে দিতে হয়েছিল। আর তারিখ পিছনো সম্ভব হচ্ছিল না। যদিও আমরা পাত্রপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে যথাসম্ভব কম মানুষকে নিমন্ত্রণ করে বিয়ের অনুষ্ঠান করেছি।” তবে মনের মানুষের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পেরে বেজায় খুশি পাত্র শুভাশিস ঘোষ। তিনি বলেন, “বউভাতে নিমন্ত্রিতদের সকলের থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখছি। নিমন্ত্রিত থাকবে অনেক কম। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আরও নতুন কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে।” শেষপর্যন্ত সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই শুক্রবার নববধূকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান পাত্র শুভাশিস। কোভিড বিধি মেনে মাস্ক পড়েই হল বধূবরণও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.