সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ফের পুরুলিয়ার মানবাজারে আক্রান্ত বিজেপি৷ এলাকার একমাত্র বিজেপি সমর্থিত পরিবার হওয়ায় আক্রান্ত হলেন এক দম্পতি৷ মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ যা হাতে পেয়েই আবারও রাজ্যের শাসকদলের কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে অশান্তির অভিযোগ তুলে আসরে নেমেছে বিজেপি৷
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়৷ পুরুলিয়ার মানবাজারে বামনি গ্রামের এক দম্পতিকে একেবারে প্রকাশ্য রাস্তায় ঘিরে ধরে জনা কয়েক দুষ্কৃতী৷ তারা তৃণমূল আশ্রিত বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের৷ সেই সময়ে তাঁরা মোবাইলে হুমকির ভিডিও করছিলেন৷ তা নজরে পড়তেই প্রথমে মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়৷ এরপর সকলের সামনেই চলে লাঠিপেটা৷ গ্রামবাসীরা ভয়ে তাদের বাধা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন৷ আক্রান্ত ওই দম্পতি মানবাজার থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন৷ মানবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই৷ টাকাপয়সা সংক্রান্ত ঝামেলার জেরেই এই মারধরের ঘটনা।
হুমকির ভিডিও করায় দুষ্কৃতীরা আক্রান্তদের মোবাইল ভেঙে দিলেও, সেই ভিডিওই এখন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ যার ভিত্তিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের আক্রমণ শানিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব৷ তবে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা দলের তরফে মানবাজারের দায়িত্বে থাকা বিবেক রাঙ্গা বলেন, ‘ওই এলাকায় শুধুমাত্র এই দম্পতিই বিজেপি সমর্থক। ওই দম্পতি লোকসভা ভোটের সময় দলের হয়ে কাজ করেছিলেন।তাই রাস্তায় একেবারে সবার সামনে তাঁদের লাঠিপেটা করেছে তৃণমূল। আমরা সমগ্র বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।’ মানবাজার ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, পুরুলিয়া লোকসভা আসন জিতে সবেতেই রাজনীতির রং লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার আগে বিজেপি এলাকায় বিজয় মিছিল করেছে।
দিনকয়েক আগে মানবাজারের কেশরগড়িয়াতে বিজেপির বিজয় মিছিলের পরই এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বিজেপি নেতা-কর্মীরা আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে এই মানবাজার বিধানসভার কেন্দা থানার পারবাইদেও তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয়। তারপর আবার মানবাজারেই বিজেপি সমর্থক দম্পতিকে মারধরের ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।
লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া জুড়ে ভরাডুবি হলেও শুধুমাত্র মানবাজার বিধানসভায় কিন্তু লিড পেয়েছে তৃণমূল৷ এই ঘটনার পর মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের আদিবাসী শিক্ষক নেতা তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্য গুরুপদ টুডু বলেন, ‘ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও এখনও অশান্তি পাকাতে একই জায়াগায় একাধিকবার বিজয় মিছিল করে যাচ্ছে বিজেপি। অথচ বিজয় মিছিল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তা ঘিরেই এলাকায় অশান্তি বাঁধছে। বামনির ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্কই নেই। অথচ এই ঘটনায় বিজেপি রাজনীতি টেনে আনল।’
ছবি: সুনীতা সিং৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.