বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: মোটরবাইকে চড়ে এসে রাস্তার উপরে শুটআউট। রাতের রাস্তায় কার্যত পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ছোঁড়া গুলিতে খুন হলেন সিপিএমের সক্রিয় কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার তাহেরপুর থানার বাদকুল্লার পারুয়া এলাকায় হাঁসখালি-কৃষ্ণনগর রোডে।
নিহত ওই সিপিএম কর্মী বাবুলাল বিশ্বাস বাদকুল্লার দোসতীনা গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার রাতে মোটরবাইকে করে বাড়ি থেকে বাপুজিনগর বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন বাবুলাল। অভিযোগ, সেই সময় হাঁসখালি-কৃষ্ণনগর রুটের রাস্তার উপরে মোটরবাইকে করে এসে পিছন থেকে দুষ্কৃতীরা বাবুলালকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বাবুলালের পিঠে লাগে গুলি। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপরে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এলাকার লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় সিপিএম নেতারা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন মারা গিয়েছেন বাবুলাল।
নিহত বাবুলালের স্ত্রী মৌসুমী বিশ্বাস বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাবুলাল সিপিএমের হয়ে প্রচুর কাজও করেছিলেন। স্থানীয় সিপিএম নেতা সুপ্রতীপ রায় ও সিপিএম বিধায়ক রমা বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন, “বাবুলাল বিশ্বাস দলের একজন সক্রিয় কর্মী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই ওই এলাকায় সিপিএমের সংগঠন মজবুত করার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রীও এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। যা শাসক দল তৃণমূলের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই তাঁর স্বামীকে খুন করে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
অবশ্য সিপিএমের তোলা এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের রানাঘাট জেলার সাংগঠনিক সভাপতি শংকর সিংহ। তাঁর পালটা বক্তব্য, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে। ওই এলাকায় সিপিএমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। আর তাই সিপিএম ছেড়ে একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকে গিয়েছে। ওদের নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে। খুনের রাজনীতি তৃণমূল পছন্দ করে না।” বিজেপি অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়। বিজেপির দাবি,”গোটা রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে তৃণমূল। সব কিছুতেই বিজেপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে।” অবশ্য অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
যদিও রাস্তার উপর শুটআউটের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রকৃত খুনের মোটিভ কী তা জানার জন্য পুলিশ তদন্তে নেমেছে। দলের সক্রিয় কর্মী এবং উঠতি ওই নেতাকে শুটআউটের প্রতিবাদে সরব হয়েছে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.