ছবি: প্রতীকী
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্রে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ছেলের। সেখান থেকে সোমবার দেহ এসে পৌঁছয় বাংলায়। কিন্তু স্রেফ করোনা সংক্রমণের আতঙ্কের কারণেই দেহ সৎকার নিয়ে দিনভর চলল টানাপোড়েন। অবশেষে ২০ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মৃত ছেলের দেহ দাহ করেন পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ১৮ তারিখ মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয় পিংলার জলচক এক নম্বর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের নারাথা গ্ৰামের বাসিন্দা রাজু জানার। বিস্তর কাঠখড় পোড়ানোর পর সোমবার বিকালে যুবকের মৃতদেহ নিয়ে মহারাষ্ট্র থেকে খড়গপুরে পৌঁছান রাজুর দুই সহকর্মী। কিন্তু মৃতদেহ গ্ৰামে প্রবেশে আপত্তি জানায় নারাথা-সহ লাগোয়া দুটি গ্ৰামের বাসিন্দারা প্রবল আপত্তি করেন। তাঁদের সন্দেহ হয় যুবকের মৃত্যু হয়েছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে। ফলে পরিবারের সদস্যরা তখন বাধ্য হয়ে মেদিনীপুর শহরে কংসাবতী নদীর পাড়ে শ্মশানে নিয়ে যায় বৈদ্যুতিক চুল্লিতে সৎকার করার জন্য। কিন্তু সেই একই সন্দেহে মেদিনীপুর শ্মশান লাগোয়া বাসিন্দারা বাধা দেয় সৎকারে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সোমবার রাত প্রায় দশটা পর্যন্ত মৃতদেহ আগলে রেখে অপেক্ষা করতে হয়েছে। পরে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে পিংলা থানার ওসি থেকে শুরু করে বিডিও সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা নারাথা গ্ৰামে যান। বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁদের মহারাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে রিপোর্ট দেখিয়ে বোঝানো হয় যুবকের করোনায় মৃত্যু হয়নি। নিউমোনিয়ার জেরে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে দুপুরে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গ থেকে রাজুর মৃতদেহ বের করে গ্ৰামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গ্ৰাম থেকে অনেকটা দূরে চন্ডিয়া নদীর পাড়ে ফাঁকা জায়গায় যুবকের মৃতদেহ সৎকার করা হয়। এই ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়গপুর) কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, যুবকের মৃতদেহ সৎকার নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে সেটা মিটে গিয়েছে। যুবকের বাবা গণেশ জানা বলেন, করোনা সন্দেহে ছেলের দেহ সৎকারে বাধা দেওয়া হয়েছিল। জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে রাজু সবং থানার চাউলকুড়ির বাসিন্দা এক ঠিকাদারের সঙ্গে মহারাষ্ট্রে একটি তামার কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। লকডাউনের জেরে সেখানে আটকে পড়ায় বাড়িতে ফিরতে পারেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.