নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: শিশুমৃত্যুর অভিযোগ নেয়নি পুলিশ এই দাবিতে দেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ শতাধিক গ্রামবাসীর। পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে ও চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করতে থাকেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বনগাঁ থানার চাঁদা পাঁচমাইল এলাকার বনগাঁ বাগদা সড়কের ঘটনায় তীব্র যানজট তৈরি হয়।
বনগাঁ থানার মনিগ্রাম বাজারে শিশু চিকিৎসক সেবক পালের একটি ঘর রয়েছে। সেবক বাবু সেখানে সামান্য অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা করেন। বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাঁর অবর্তমানে চেম্বারটি সামলান অমর মণ্ডল নামে এক চিকিৎসক। এলাকার বহু মানুষ মনিগ্রাম বাজারে এসে তার শিশুদের চিকিৎসা করান। চাঁদা পাঁচমাইল এলাকার কৃষ্ণ সরকার তার যমজ কন্যাসন্তানকে নিয়ে ওই চেম্বারে দেখাতে অসতেন। দিনকয়েক আগে রিয়া নামে এক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওই চেম্বারে নিয়ে আসা হয়।
চিকিৎসক অমর মণ্ডল বলেন,”শিশুটিকে সেদিন হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। আর্থিক কারণে ওরা যেতে পারবেন না জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফের চিকিৎসককে দেখাতে আসেন। বুধবার বিকালে শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখেই চিকিৎসক তাঁকে ওষুধ, অক্সিজেন দেন। একটু সুস্থ হলেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেন। কিছু সময় পর চেম্বারের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়।” তার পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক ওই শিশুটিকে দেখেই তার পেট ধরে চাপ দিতে থাকে। তার ফলেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। এরপর ওই মৃত শিশুকে নিয়ে তার মা চেম্বারের সামনে বসে পড়েন। চিকিৎসকের দাবি মানতে নারাজ শিশুর বাবা। তিনি বলেন, “সর্দি-কাশির সমস্যা ছিল আমার মেয়ের। অবস্থা খারাপ আমাদের একবারও বলা হয়নি। যদি বলা হত তবে আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতাম।”
ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকার লোকেরা ভিড় করে চেম্বারে। চেম্বার ছেড়ে চলে যান চিকিৎসক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বনগাঁ থানার পুলিশ। চিকিৎসক সেবক পাল বলেন “শিশুটিকে বৃহস্পতিবারই প্রথম দেখলাম। অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। হাসপাতালে পৌঁছনোর অবস্থায় আনতে ওষুধ দিয়ে শেষ চেষ্টা করেও রক্ষা করা যায়নি।” বুধবার রাতে ওই শিশুটিকে বনগাঁ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মহকুমা হাসপাতালে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়৷ তবে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে পুলিশ অস্বীকার করে বলেও অভিযোগ নিহত শিশুর পরিবারের। তাই দেহ নিয়ে গ্রামে ফিরে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। পুলিশের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে ধ্বনি দিতে থাকেন অবরোধকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। তবে দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.