সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন করে দ্বিতীয়বার বিয়ে। তবে বিয়ের পরই দ্বিতীয় স্ত্রীর কানে পৌঁছয় প্রথম স্ত্রীর কথা। তা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। বাপের বাড়িতে চলে গিয়েও হল না শেষরক্ষা। সম্পর্কের টানাপোড়েনে স্ত্রীকে প্রথমে ধারালো অস্ত্রের কোপ এবং পরে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ। অন্ডাল থানার অন্তর্গত কাজোরা গ্রামের হাজরা পাড়ার ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা এলাকা। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উখরার সুভাষ পাড়ার বাসিন্দা বিক্রম রায় খান্দরা প্রতিবন্ধী কেন্দ্রে কর্মরত। আইভি হাজরা স্থানীয় একটি স্কুলের পার্টটাইম শিক্ষিকা ছিলেন। বিক্রমবাবুর সঙ্গে কর্মস্থলে পরিচয় হয় আইভির। এরপর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁদের। আট মাস আগে বিক্রমের সঙ্গে বিয়ে হয় আইভির। ওই মহিলার পরিবারের অভিযোগ, প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকার কথা আইভির কাছে গোপন করেই বিয়ে করেছিল বিক্রম। বিয়ের পর তা জানতে পারেন আইভি। এরপর কাজোরায় নিজের বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন আইভি। তবে বিক্রমের সেখানে যাতায়াত ছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে কাজোরায় আইভির বাপের বাড়িতে যান বিক্রম। সেই সময় বাড়িতে আইভি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তাঁর ঠাকুমা মায়ারানি হাজরা। বৃদ্ধার অভিযোগ, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। তারপরই বিক্রম ধারালো অস্ত্র নিয়ে আইভির উপর চড়াও হয়। তাঁকে বাধা দিতে গিয়ে জখম হন মায়ারানিও। আইভিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে খুন করে বিক্রম। তারপর তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অন্ডাল থানার পুলিশ। তবে ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে আইভির। তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইভির ঠাকুমার অভিযোগের ভিত্তিতে বিক্রমকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশির জেরায় আইভিকে খুনের বিষয়টি স্বীকারও করে বিক্রম।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আইভির সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল বিক্রম। তবে তাতে আপত্তি ছিল আইভির। এই মতবিরোধের জেরে খুন বলে অনুমান পুলিশের। তবে নিশ্চিতভাবে এখনও কারণ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা। বুধবার অভিযুক্তকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে বলেই খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.