রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ছেলেধরা সন্দেহে ফের গণপিটুনির ঘটনায় এবার চাঞ্চল্য ছড়াল আলিপুরদুয়ারে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়েন আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের গাড়িতেও চলে ভাঙচুর। মারধর করা হয় পুলিশ কর্মীদের। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে ব়্যাফ। পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্ত ব্যক্তি আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ এক ব্যক্তি ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর আচরণে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। এরপরই তাঁকে আটকে মারধর শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আক্রান্তকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। পুলিশের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় রিভলভার। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে। পুলিশ ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নামানো হয় ব়্যাফ। দীর্ঘক্ষণ পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এরপর পুলিশের তরফে আক্রান্তকে উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই ‘অশরীরী’ ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল আলিপুরদুয়ারে। অভিযোগ উঠছিল রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে বাচ্চাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছেন কেউ। দূর থেকে তাঁকে দেখা গেলেও কাছে যেতেই মুহূর্তে নাকি ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। আতঙ্কে এলাকায় পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কার্যত ঘরবন্দি করে রাখা হচ্ছিল ছোটদের। স্থানীয়রা অনুমান করছিলেন, আক্রান্ত কবিরাজই শিশু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত।এমনকী এই আলোচনাও এলাকায় শোনা গিয়েছে যে কবিরাজ নিজের তৈরি ওষুধের জাদুতে মুহূর্তেই ‘অশরীরী’ রূপ ধারণ করতে পারেন৷ সেই কারণেই রবিবার সকালে ওই ব্যক্তিকে দেখেই স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। চলে আক্রমণ। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “কবিরাজ রাতে অন্য গ্রামে গিয়েছিলেন। সকালে ফিরছিলেন। সেই সময় স্থানীয়রা তাঁকে চোর সন্দেহে মারধর করে।” পরিস্থিতি আয়ত্তে এলেও এখনও থমথমে এলাকা। পরিস্থিতি যাতে ফের উত্তপ্ত না হয়, সেই কারণেই ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.