শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: দিল্লির সংঘর্ষে গুরুতর জখম এ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুরের এক যুবক। কোনওক্রমে সঙ্গীদের সঙ্গে রবিবার ঘরে ফিরলেন তিনি। বাড়িতে পৌঁছতেই তাঁকে ভরতি করা হয় রায়গঞ্জ হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁর।
কেউ তিরিশ বছর কেউ বা তার থেকেও খানিক বেশি সময় কর্মসূত্রে দিল্লিতে কাটিয়েছেন। রাজধানীর এই উত্তাল সময়েও সেখানেই ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের ওইসকল শ্রমিকরা। স্বাভাবিকভাবেই মারধর-হানাহানির মাঝে পড়তে হয় তাঁদের। গুরুতর জখম হন ইটাহারের পাজোলের বাসিন্দা অজিত শেখ।
এই ঘটনাই আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছিল বাকিদের। প্রাণ বাঁচাতে দিল্লি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন দিল্লিবাসী এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৮০ জন। সেইমতো রাতে লুকিয়ে রাধিকাপুর-আনন্দবিহার এক্সপ্রেসে উঠে পড়েন তাঁরা।
ট্রেনেও প্রতিমুহূর্তে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে ছিলেন তাঁরা। মনে ভয় ছিল, এই বুঝি ফের অশান্তির মাঝে পড়তে হয়। ট্রেন বাংলায় প্রবেশ করার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে। রবিবার সকালে উত্তর দিনাজপুরে পৌঁছন সেখানকার ৪০ জন বাসিন্দা। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন আক্রান্ত অজিত শেখ। ইহাটারের পাজোলের বাসিন্দা অজিত রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরতেই তাঁকে ভরতি করা হয় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। দিল্লি থেকে ঘরে ফেরা শেখ মজিবুর জানান, তিনি থাকতেন শাহিনবাগে। বরাবরই শান্ত এলাকা ছিল। হঠাৎ করে পরিস্থিতি এতটা জটিল হয়ে যাবে ভাবতেও পারেননি। যে দিল্লিকে তাঁরা ৩০ বছর ধরে চিনতেন শেষ কয়েকদিনে যেন একেবারেই পালটে গিয়েছে। একই আক্ষেপের সুর দিল্লি ফেরত অন্যান্য শ্রমিকদের গলায়ও।
দিল্লির এই অশান্তি পরিস্থিতির মধ্যে সুস্থভাবে ঘরের ছেলে বাড়ি ফেরায় খুশি পরিবার। কিন্তু সেইসঙ্গে রয়েছে দুশ্চিন্তাও। কারণ, প্রত্যেকেই অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেতে কর্মসূত্রে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন। তাই তারা ফিরে আসায় পরিবারের ভবিষ্যৎ কী হবে। সংসার চলবে কী করে? সেই চিন্তাই তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.