সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রসিকতা করেই প্রতিবেশীকে ‘পাগলি’ বলেছিল কিশোর। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। স্রেফ এই কারণেই ১২ বছরের ওই নাবালককে অপহরণ ও গলা টিপে খুন করার অভিযোগ উঠল মহিলার বিরুদ্ধে। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য প্রথমে একটি জলাশয়ে ও পরে কানহা পাহাড়ের গুহায় দেহটি লুকিয়ে রাখে অভিযুক্ত। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মূল অভিযুক্ত-সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার হয়েছে দেহ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৮ তারিখ গোপালপুরের সাহেবরাম মাহাতো তাঁর ছেলে সুভাষকে গ্রামের বাসিন্দা সরলা লায়ার দোকানে ব্লেড কিনতে পাঠিয়েছিলেন। আর বাড়ি ফেরেনি সে। দীর্ঘক্ষণ খোঁজার পরও ছেলের হদিশ না মেলায় পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার। অপহরণের মামলা করে তাঁরা। এরপরই তদন্তে উঠে আসে ওই দোকান মালিক সরলার নাম। তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, ওই দিন দোকান বন্ধ থাকায় ব্লেড নিতে সরলার বাড়িতে হাজির হয় ওই নাবালক। সেখানে সুভাষের সঙ্গে বচসা বাঁধে দোকান মালিকের পুত্রবধূ যশোদার। ক্রমেই তা বিরাট আকার নেয়। সূত্রের খবর, সেই সময়ই যশোদাকে ‘পাগলি’ সম্বোধন করে ওই কিশোর। এতেই আরও ক্ষেপে যায় সে। এরপর কিশোরকে জোর করে একটি ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে গলা টিপে খুন করে সরলার পুত্রবধূ যশোদা। তাকে সাহায্য করে পরিবারের সদস্যরা। কিছুক্ষণ দেহটি ঘরে রাখলেও পরে বিষয়টি ধামা চাপা দিতে দেহটি গ্রামের একটি জলাশয়ে ফেলে দেয় তারা। রাতে সেখান থেকে দেহ উদ্ধার করে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে কানহা পাহাড়ের গুহায় রেখে দেয়।
এই তথ্যের ভিত্তিতে ওই গুহায় তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয়েছে নাবালকের নগ্ন দেহ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত যশোদা লায়া, তার স্বামী তারপদ লায়া, শাশুড়ি সরলা লায়া, দুই দেওর অভিমুন্য লায়া, লালমোহন লায়া। মঙ্গলবার এদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তারাপদ’র তিনদিন পুলিশ হেফাজত হয়। বাকিদেরকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে।” জানা গিয়েছে, এই কিশোরের পরিবারের সঙ্গে পুরনো বিবাদ ছিল অভিযুক্তদের পরিবারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.