ছবি: প্রতীকী
সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: করোনা হয়েছে, তাই আইসোলেশনে রয়েছেন পাড়ার বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের নার্স! এমনকী পরিবারের সকলেও হোম কোয়ারেন্টাইনে। কড়া নজরদারির মধ্যে তাঁরাও। এলাকায় এমন গুজব ছড়িয়ে পড়তেই কার্যত একঘরে নার্স ও তাঁর পরিবার। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
যে দোকান থেকে সারা বছর ওষুধ কেনেন, সেই দোকানদার সাফ ‘না’ করে দিয়েছেন। নিষেধ করেছেন তাঁর দোকানে যেতে। রাস্তায় বেরোলে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাঁদের দিকে তাকাচ্ছেন আশপাশের লোকজন। এমনকী দু’দিন আগে পর্যন্ত যারা লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, গুজব ছড়াতেই এলাকা শুনশান। আতঙ্কে বাড়িতে লুকিয়েছেন তাঁরা। এখন রীতিমত একঘরে অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ওই নার্স ও তাঁর পরিবার। এমনকী তাঁদের ব্যবহারের ‘মেডিকেল ডিউটি’ লেখা গাড়িটি বাড়ির সামনে পার্ক করা থাকলেও, আতঙ্কে সেখান থেকে যাচ্ছেন না কেউই। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই নার্স। পাশাপাশি, এনজেপি থানাতে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগ, এই গুজব ছড়ানোর পিছনে রয়েছেন এক কাউন্সিলর।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই যেকোনও তথ্য ছড়ানোর আগে প্রত্যেকে দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ করেছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “এই ঘটনা আমি শুনেছি। গোটা বিষয়টি দুঃখজনক। কিন্তু তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে জনপ্রতিনিধিরা আরেকটু সচেতন হলে ভাল হয়।” মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “কোনওরকম গুজব ছড়ানো উচিত নয়, তবে কোনও কাউন্সিলর এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করতে পারেন বলে আমি মনে করি না। হয়তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তাকে জড়ানো হচ্ছে।”
এবিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর কথায়, “এমন কোনও গুজব আমি ছড়াযইনি, আমি ওই নার্সকে চিনি না।” প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সুশ্রুতনগরের সম্পাদক ডা: সন্দীপ সেনগুপ্তের দাবি, ওই কাউন্সিলর গুজব ছড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে যারা গুজব ছড়াচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.