অরূপ বসাক, মালবাজার: বাবা অসুস্থ। ভাঁড়ার শূন্য। হাঁড়ি চলবে কী করে তা ভেবে পাচ্ছিল না নবম শ্রেণির ছাত্রী। সংসারের বোঝা টানতে তাই বাধ্য হয়ে টোটোর স্টিয়ারিং ধরল নবম শ্রেণির পড়ুয়া। ঘটনাটি মালবাজারের (Malbazar) মেটেলি ব্লকের বড়দিঘি চা বাগানের।
উপার্জনের আশায় টোটো কিনেছিলেন মেটেলির মার্টিন টোপনো। ভালই চলছিল সব কিছু। কিন্তু ভাগ্য বিরূপ, কিছুদিন যেতে না যেতেই শরীরে থাবা বসাল বিরল রোগ। এখন চোখেও ঠিকঠাক দেখেন না মার্টিন, কর্ম ক্ষমতাও অনেকটাই কমেছে। তাই বাধ্য হয়ে তাঁর পেশা সামলাচ্ছেন বড়ো মেয়ে রোশিতা টোপনো। অসুস্থ বাবাকে পিছনের সিটে বসিয়ে টোটো চালাচ্ছে চালসা গয়ানাথ বিদ্যাপিঠের নবম শ্ৰেণির ছাত্রী। টোটোতে যাত্রী নিয়ে তাঁদের পৌঁছে দিচ্ছে গন্তব্যে।
স্ত্রী, তিন মেয়েকে নিয়ে সংসার মার্টিন টেপানোর। স্ত্রী বহুদিন ধরেই কাজ করেন চা বাগানে। পাঁচজনের সংসারের খরচ অনেক। তাই টোটো কিনেছিলেন মার্টিন। কিন্তু এখন মাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সুগার-সহ তাঁর নানান শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা চলছে। মার্টিনের কথায়, “চোখে দেখি না, টোটো চালানোর শক্তিও নেই। তাই বড়ো মেয়ে প্রায় মাস ছয়েক ধরে আমার কেনা টোটো চালাচ্ছে। টোটো না চললে সংসার চলবে কী করে! তার উপরে রয়েছে ওষুধের খরচ। অতো টাকা কোথা থেকে আসবে। বাড়িতে আরও দুটো মেয়ে আছে।” বর্তমানে টোটো চালক রোশিতা টোপনো বলে, “ছয় মাস ধরে টোটো চালাচ্ছি। বাবা অসুস্থ। ভাই বা দাদা নেই। দুই ছোট বোন আছে। টোটো না চালালে বাবার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ আসবে কোথা থেকে। তাই টোটো চালাচ্ছি।” এখন স্কুল বন্ধ। তবে স্কুল খুললে কে টোটো চালাবে তা নিয়েই চিন্তিত সে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.