সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনে আটকে পড়েছিল রাজস্থানের জওহরনগরে। হস্টেলে খাবারও পায়নি আসানসোলের বাসিন্দা ছাত্রী তনিমা কর। অবশেষে সরকারের তৎপরতায় বাড়ি ফিরেছে সে। কেমন ছিল হস্টেলের শেষ কটাদিনের অভিজ্ঞতা? রাজস্থান থেকে আসানসোলের দীর্ঘ যাত্রাপথের অভিজ্ঞতাই বা কেমন? বাড়ি ফিরে অভিজ্ঞতার কথা জানাল ওই ছাত্রী।
স্বপ্ন চিকিৎসক হয়ে সকলের সেবা করার। কিন্তু তার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিতে হবে। তাই দরকার প্রস্তুতির। সে কারণে আসানসোল থেকে সূদুর রাজস্থানের জওহরনগরে পাড়ি দিয়েছিল পড়ুয়া তনিমা কর। দিব্যি চলছিল পড়াশোনা। বাদ সাধল লকডাউন। হস্টেল বন্দি হয়ে পড়ল। প্রথম দিকে সব ঠিকই ছিল। লকডাউনে বিশেষ কোনও সমস্যা হয়নি। তবে দিন যত গড়ায়, ততই বাড়তে থাকে সমস্যা। ছাত্রী জানায়, হস্টেলে শেষ কটাদিন কার্যত না খেয়ে কেটেছে তার। নিজেদের কাছে থাকা সামান্য কিছু সামগ্রী দিয়ে চলে সেই দিনগুলি। আচমকাই শুনতে পায় সরকারের তৎপরতায় বাড়ি ফেরার সুযোগ মিলতে পারে। কিন্তু সেখানেও গন্ডগোল। বেশিরভাগ ভিনরাজ্যের পড়ুয়ারা যখন ফিরবে বলে প্রস্তুত, তখন ওই ছাত্রী এবং তার বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব ফেরার জন্য কোনও বাসই পায়নি। বাধ্য হয়ে নবান্নের হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে। তাতেই মিলল সমাধান সূত্র। এরপর আর পিছু ফিরে চাইতে হয়নি তাকে।
গত বুধবার বাড়ি ফেরার জন্য বাসের বন্দোবস্ত হয়ে যায়। ওইদিন বাসে ওঠে তনিমা এবং তার বন্ধুবান্ধবরা। মুখে মাস্ক পরে এবং বাসে দূরত্ব বজায় রেখে বসে ২০ জন নিজেদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে বেশ কয়েকবার বাস থামে। ছাত্রী জানায়, বাসে বসে থাকাকালীন বারবার খাবার দেওয়া হয় তাদের। এলাহাবাদের ভারত সেবাশ্রমে বিশ্রাম নেওয়ারও সুবন্দোবস্ত ছিল। সেখানেও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারদাবার দেওয়া হয় তাদের। দীর্ঘ যাত্রাপথ পেরিয়ে গত শুক্রবার আসানসোলে পৌঁছয় বাস। আদৌ সেই পড়ুয়ার শরীরে করোনা সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আসানসোলে শারীরিক পরীক্ষা হয় ওই বাসে চড়ে আসা প্রত্যেকের। এরপর প্রশাসনিক আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। আপাতত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তনিমাদের। কঠিন পরিস্থিতিতে নিজের বাড়ি ফিরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে ওই পড়ুয়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদও জানিয়েছে সে। একদিকে করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক তার উপর আবার মেয়ে রয়েছে বাড়ি থেকে অনেক দূরে। তাই লকডাউনের দিনকটা দুশ্চিন্তাতেই কেটেছে ছাত্রীর বাবা এবং মায়ের। সন্তান বাড়ি ফেরায় শান্তিতে তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.