শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: করোনা কালে (Coronavirus) স্কুলছুট রুখতে লাগাতার কাজ। সপ্তাহের দু’দিন বিনা পয়সায় এলাকার দরিদ্র খুদেদের টিউশন পড়ানোর পুরস্কার পেল মুর্শিদাবাদের সুতির সরফরাজ। রাজ্যের তরফে ওই একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হল ‘বীরপুরুষ’ সম্মান। পেশায় বিড়ি শ্রমিক পরিবারের সন্তান সরফরাজ এই স্বীকৃতি পেয়ে আপ্লুত।
মুর্শিদাবাদের সুতির দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জগতাইয়ের হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম। পেশায় বিড়ি কারখানার শ্রমিক। স্ত্রী রোজিনা বিবিও বিড়ি বাঁধেন। ইসলাম দম্পতির পাঁচ মেয়ে, দুই ছেলে। পরিবারের বড় সন্তান সরফরাজ। পঞ্চগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে পড়ে সে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সরফরাজ। ওই সংস্থার হয়ে এলাকায় নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ ও স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করার কাজই করে সে। পাশাপাশি বিনা পয়সায় টিউশন পড়ানোর কাজে যুক্ত সরফরাজ।
গত বছর লকডাউনের জেরে যখন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তখন সুতিরই অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করেছিল পরিবার। সরফরাজ দুই নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাদের বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হয়। সেইসঙ্গে স্কুলছুট পড়ুয়াদের সপ্তাহে শনি ও রবিবার বিনা পয়সায় টিউশন পড়াচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এত কম বয়সে সমাজের পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলির ছেলেমেয়েদের উত্তরণে কাজ করে যাওয়ার জন্যই শনিবার দুপুরে নিউটাউন রবীন্দ্রতীর্থ মঞ্চে রাজ্যের তরফে সরফরাজ নওয়াজকে দেওয়া হল ‘বীরপুরুষ’ সম্মান।
সরফরাজের মা রোজিনা বিবি জানান, “কখনও ভাবতেই পারিনি আমার ছেলে রাজ্য সরকারের ‘বীরপুরুষ’ সম্মান পাবে। ছেলের এই সম্মানে মা হিসাবে আমি গর্বিত।” এদিকে মুর্শিদাবাদ শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অর্জুন দত্ত বলেন, “সরফরাজের মতো যোদ্ধাদের এই সম্মান তরুণদের সামাজিক কাজে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.