ধীমান রায়, কাটোয়া: মাসপাঁচেক আগে বিয়ে হয়েছে। কিছুদিন পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি লেগেই ছিল। তা চরম আকার নিলে নববধূ ফোন করে বাপেরবাড়িতে জানিয়েছিলেন। বাপেরবাড়ি থেকে দলবল বেঁধে এসে বধূর শ্বশুরবাড়িতে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল। শুধু মারধরেই ক্ষান্ত হননি গৃহবধূ ও তার বাপেরবাড়ির লোকজন। ভাঙচুরের পাশাপাশি চলল দু’রাউন্ড গুলিও। এই ঘটনা ঘিরে এখনও থমথমে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাঁদরা এলাকা৷ শ্বশুরবাড়িতে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগে নববধূ-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ধৃতদের কাছ থেকে সেভেন এমএম পিস্তল এবং চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে৷
কেতুগ্রামের কাঁদরা গ্রামের বাসিন্দা শিশির মাঝির ছোট ছেলে বুদ্ধদেব মাঝির সঙ্গে বিয়ে হয় বীরভূমের লাভপুর থানার শিবা গ্রামের বাসিন্দা লাল্টু বাগদির মেয়ে ঋতুর৷ বুদ্ধদেব রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বিয়ের মাসখানেকের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি শুরু হয়। দুই পরিবার থেকে তাদের মানিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়৷ তবে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে। পরিস্থিতি চরম আকার নেয় গত শুক্রবার। বুদ্ধদেবের বাবা জানান, তাঁর ছেলের সঙ্গে পুত্রবধূর শুক্রবার সকালে অশান্তি হয়। পুত্রবধূ ঋতু ফোন করে বাপেরবাড়িতে জানায়।
ঋতুর ফোন পেয়ে তাঁর বাবা, মা, দুই কাকা, দাদু বুদ্ধদেবদের বাড়িতে আসেন। তারপরেই শুরু হয় তুলকালাম কাণ্ড। তাঁর অভিযোগ,‘‘আমার বেয়াই, বেয়ানরা এসেই বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে। আমার ছেলে, স্ত্রীকে মারধর করে৷ আমাকেও মারধর করে। এমন সময় ঋতুর কাকা গৌরাঙ্গ গুলি চালাতেও শুরু করে। দুটি গুলিই পাশ কেটে চলে যায়। তাই কোনওক্রমে বেঁচে যাই।” গুলির আওয়াজ ও চিৎকার শুনে পাড়া প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে যায়৷ তাঁরাই ঘিরে ধরে হামলাকারীদের। চলে মারধরও। ঋতু ও তার আত্মীয়দের ঘিরে ধরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুত্রবধূ-সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে৷
ধৃতদের শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়৷ অভিযুক্ত নববধূ ঋতু ও তার মা সুমিত্রাদেবী শর্তসাপেক্ষ জামিনে ছাড়া পান। গৃহবধূর কাকাকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ৭ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গৃহবধূর পরিবারের দাবি, ‘‘বুদ্ধদেবের সঙ্গে এক আত্মীয়ের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। ঋতু তার প্রতিবাদ করত। তাতেই ঋতুর উপর অত্যাচার করা হচ্ছিল৷ তাই বাপের বাড়ির লোকজন মাথার ঠিক রাখতে না পেরে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে৷’’ এমন ধুন্ধুমার কাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি জানতে ওই দম্পতির শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে৷
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.